মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শুধু যন্ত্রপাতি ক্রয়ের হিসাব নিকাশ দেখলে যে কারো চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। কখনো দপ্তরগুলোর তদন্তে দেখা যাচ্ছে যন্ত্রপাতির মূল মূল্য থেকে শত গুণ বেশি আবার কখনো কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি অব্যবহৃত থাকায় সেবা পাচ্ছে না সেবাগ্রাহকরা।
আড়াইশ শয্যার হাসপাতালে ওষুধ সরবরাহ নিয়ে রয়েছে অনেক অভিযোগ। এছাড়া সম্প্রতি হাসপাতালটির বিরুদ্ধে যন্ত্রপাতি কেনায় অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে। শুধু এই হাসপাতাল নয়, সিরাজগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের যন্ত্রপাতির মূল্য দেখলেও মূল্যে চক্ষু চড়ক হবে যে কারো। ২০১৭ -১৮ অর্থ বছরে ১০ টি ১ কোটি ৫ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি কেনা হয় বাজারমূল্যের চেয়ে ১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বেশিতে। এছাড়া ২ কোটি ৮০ লাখ মূল্যের একটি এম আর আই মেশিন ছাড়ায় সাড়ে ৯ কোটি টাকা। ২ কোটি ৩৯ লাখ ২০ হাজারের কালার ডেপলারে ১ কোটি ৩০ রাখ ৪০ হাজার টাকেই লোপাট হয়।
ফরিদপুর মেডিকেলে ১০ হাজার টাকার ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মেশিন কেনা হয় ১০ লাখ ২৫ হাজার টাকায়। যে আইসিইউ ব্যবহারই করা হয় না তার জন্য অক্সিজেন জেনারেটিং প্লান্ট কেনা হয় ৫ কোটি টাকায়, ১৬৬ টি যন্ত্রপাতি কেনা হয় দেড়শ গুন বেশি দামে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত বলছে ৪১ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে হাসপাতালটিতে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ফেলো ড. সাব্বির হায়দার বলেন, স্বাস্থ্যখাতে যদি দুর্নীতি রাশ করতে পারতাম, আমরা যদি অপচয়গুলি রোধ করতে পারতাম, মেডিসিন কিনতে পারতাম, তাহলে আমরা গরীবদের আউট অফ পকেট পেমেন্ট অনেকটা কমাতে পারতাম। তবে সাবেক দুদক চেয়ারম্যান বলেন, স্বাস্থ্যখাতের এসব দুর্নীতি শুধুমাত্র হাসপাতাল পর্যায়ের, নাকি তা গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।গোলাম রহমান বলেন, ক্রয় করে কে ক্রয়ের অনুমোদন দেয় কে, এসব যদি পরীক্ষা করা হয় তাহলে দেখা যাবে দুর্নীতির চেইনের একটা যোগসূত্র ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত আছে। এদিকে অপ্রয়োজনে যন্ত্রপাতি কেনার জন্য আত্মসাতের টাকা ওষুধ সরবরাহ ও জটিল রোগ চিকিৎসায় বিনিয়োগ করার পরামর্শ স্বাস্থ্য অর্থনীতি গবেষকদের।