লিটন সরকার বাদল,
নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর চেয়ারম্যান ও চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় যে পরিমাণ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, কোনও দেশে যুদ্ধেও এত মানুষের মৃত্যু হয় না।’ সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর সায়েদাবাদ- যাত্রাবাড়ী সড়কে দুই বাসের রেষারেষিতে নিহত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক তুহিন হত্যার বিচারের দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘২০১৮ সালে যে সড়ক পরিবহন আইন করা হয়েছে, সেটির বাস্তবায়ন হচ্ছে না। একটি মহল ও গোষ্ঠীর চাপের কারণে আইনটি সেভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। যতদিন পর্যন্ত এই আইন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হবে না, ততদিন সড়কে শৃঙ্খলা ফিরবে না। মৃত্যু, পঙ্গুত্বের হার কমবে না। আশা করবো, কর্তৃপক্ষ যারা আছেন, তারা যেন এই আইন পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করেন। আমরা যদি সরকারকে চাপ না দিই, আইন বাস্তবায়ন হবে না। আইন বাস্তবায়ন না হলে এভাবে মৃত্যু চলতেই থাকবে। তিনি বলেন, ‘এই আইন বাস্তবায়ন হলে প্রকৃত দোষীদের বিচার হবে। দায়ীদের শাস্তি হচ্ছে না বলেই সড়ক দুর্ঘটনা কমানো যাচ্ছে না।’
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘দেশবাসীকে আমি বলবো, সড়ক দুর্ঘটনা মানুষের ভুলের জন্য নয়; আইন-নিয়ম না মানা, উপযুক্ত ট্রেনিং না নেওয়া এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ না করার জন্য হয়। পথচারীরাও দায় এড়াতে পারেন না। নিয়ম না মেনে রাস্তা পারাপারের ঘটনায় সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের দেশে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।’
নিসচা চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করছে। দেশে প্রতিনিয়ত সড়কে নতুন গাড়ি নামছে। কিন্তু আমরা যদি নিয়ম না জানি, না মানি—সড়ক দুর্ঘটনা কমানো যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকটি বিবেচনায় নিতে হবে। চালক, মালিক, শ্রমিক সবাইকেই উপলব্ধির মধ্যে আসতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে করণীয় বিষয়ে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এই করণীয় আপনাদের করতে হবে।’ এ সময় তিনি রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের রাইডারদের দক্ষ করে প্রশিক্ষণ দিয়ে রাস্তায় নামানোর আহ্বান জানান।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, নিসচার সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম আযাদ হোসেন,নিহত ওমর ফারুক তুহিনের পরিবারের সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।