শহীদুজ্জামান রনি: আজ ১৫ মে ২০২২ মেঘনা উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শহীদুজ্জামান রনি ,প্রচার সম্পাদক নাজমুল হাসান,নির্বাহি সদস্য আলা উদ্দিন ইসলাম সহ অনেকেই সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল এর নামে মিথ্যা ও পরিকল্পিত অপপ্রচার এর বিরুদ্ধে তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার বাংগরা বাজার থানাধীন রাজাবাড়ী পূর্ব পাড়া জামে মসজিদে গত ০১ মে ২০২২ রোববার দিবাগত রাতে পাড়ার মুসল্লিদের সাথে আশ্রাফপুর (নবীনগর) গ্রামের দুই ভাই পারভেজ ও সামাদ এর একটি অনাকঙ্খিত ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপর থানা পুলিশ ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ঘটনা স্থলে ছুটে এসে পক্ষদ্বয়ের সাথে কথা বলে বিষয়টি তাৎক্ষণিক ভাবেই সমাধান করে দিয়ে গেলেও ওরাতেই পারভেজ বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানায় এবং কুমিল্লা জেলার বাংগরা বাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
অর্থাৎ ঘটনা কুমিল্লায় হলেও দুই জেলার দুই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে তারা। একই সাথে প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে অপপ্রচারের মাধ্যমে ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার পায়তারা করছে! এঘটনায় ওই গ্রামে সরেজমিনে খোঁজখবর নিলে প্রকৃত ঘটনাটি বেরিয়ে আসে। কথা হয়ে মসজিদে ওই সময় তারাবির নামাজ পড়তে আসা রাজাবাড়ী গ্রামের হাবিল মিয় (৬৫), হাজী মোবারক সরকার (৫৫), আবু সাইদ (৬০), রাশেদ মিয়া (৪৫), মানিক মিয়া (৪০), আশ্রাফপুর গ্রমার জয়নাল (৪০)সহ অন্তত: ২০-২৫ জনের সাথে। তারা জানান, ঈদের আগে ০১ মে মসজিদের সভাপতি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (ইমরুল) গ্রামে এলে, মহল্লার ১৫-২০ জন লোক কয়েক দফায় মসজিদের সভাপতি সাংবাদিক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (ইমরুল) এর কাছে আসেন। এসময় মসজিদ সংক্রান্ত নানান অভিযোগ তুলে ধরেন। বিশেষ করে ঈদের নামাজ এবারও ঈদগাহে না পড়ে মসজিদের পড়বে, এই দাবি জানান সভাপতির কাছে। সভাপতি এবারের ঈদ জামায়াত ঈদগাহেই পড়ার পক্ষে মত দেন। আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনে আগামী কোরবানীর ঈদে এ নিয়ে আলোচনার কথা বলেন। কিন্তু মহল্লাবাসী এই ঈদ থেকেই পূর্ব পাড়াতে জামায়াত পড়ার পক্ষে অনড় ছিলেন বলে জানান। ওইদিনই সন্ধ্যায় মহল্লার প্রায় ১৫-২০ জন মহল্লাবাসী আবারও সভাপতি ইমরুল এর কাছে যান। সভাপতি মাগরিবের নামাজের পর আমাদের নিয়ে মহল্লার প্রতিটি বাড়ীতে ঘুরেঘুরে ঈদের জামায়াতের বিষয়ে সবার মতামত জানতে চান। মসজিদের সভাপতি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (ইমরুল) জানান, আমার উদ্দেশ্য ছিলো যদি সংখ্যাগরিষ্ট মতামত পাওয়া যায় তাহলে মসজিদে বসে সবাই আলোচনা করে ঈদ জামায়াতের বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আমরা মহল্লা ঘুরে প্রায় ৯৫% লোকের মতামত পাই ‘মসজিদে জামায়াত পড়ার পক্ষে’। তিনি বলেন, মহল্লার সবার মতামত জেনে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্যে সবাই মসজিদে গিয়ে বসি। বেশ কিছু মুসল্লির উপস্থিতিতে ঈদের জামায়াত নিয়ে আলোচনা উত্থাপন করেন হাজী মোবারক সরকার। তিনি মহল্লাবাসীর মতামত তুলে ধরেন। এসময় সামাদ ঈদগাহের পক্ষে তার মতামত দেন এবং বক্তব্যে আপত্তিকর কথাবার্তা বলেন। নিজেকে নামাজী ও পরহেজগার দাবি করে অন্যদের বেনামাজি বলে মন্তব্য করেন। এসময় রাশেদ মিয়া, হাজী মোবারক, জয়নাল, রুবেলসহ উপস্থিত সবাই সামাদ সাহেবের আপত্তিকর কথাবার্তার প্রতিবাদ করেন। কিছু বুঝে উঠার আগেই সামাদের ছোট ভাই মসজিদের সেক্রেটারি পারভেজ লাফ দিয়ে এসে রাশেদ মিয়াকে ঘুষি মেরে রক্তাক্ত করে। সামাদ বড় ভাই হয়েও সেক্রেটারি পারভেজকে না থামিয়ে ওরা দুই ভাই মারমুখী হয়ে উঠে এবং নিমিশেই সামাদ নিজেও রাশেদকে আরেকটি ঘুষি মারে। এসময় রাশেদও উত্তেজিত হয়ে উঠলে ছবির ও মামুন ভুইয়া রাশেদকে জড়িয়ে ধরেফেলে। সভাপতি আরও জানান, এঘটনায় তাৎক্ষনিক ভাবে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে এলাপাতাড়ী কিলঘুষি শুরু হয়। উপায়ান্ত না দেখে বাংগরা বাজার থানাকে অবহিত করি। প্রায় আধা মিনিটের এলোপাথাড়ি সংঘর্ষে কয়েকজনের গায়ে ঘুষি লাগে। এসময় সামাদের ঠুটে আঘাত লাগে, রাশেদের দুই চোখের মাঝামাঝি নাক ও কপালের মাঝামাঝি অংশে আঘাত লেগে রক্তক্ষরণ হয়। এদিকে নরম চামড়া হওয়াতে সামাদের ঠুট ফুলে যায় এবং রক্তক্ষরণ হয়। এই ফাঁকে খবর পেয়ে সামাদের চাচাতো ভাই সুমন বাবু এসে গ্রাম ও আসপাশের গ্রামের কিছু লোকজনকে জড়ো করে পিরিস্থিতি আরো উত্তেজিত করে তুলে। এসময় বাংগরা বাজার থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত মানশ বড়ুয়ার নেতৃত্বে একদল পুলিশ এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল শিমুল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। ইন্সপেক্টর তদন্ত মানশ বড়ুয়া এবং ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল শিমুল তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি সমাধান করে দিলে উভয় পক্ষই তা মেনে নেয়। কিন্তু রাতেই সামাদ নবীনগরে এবং বাংগরা বাজার থানায় পৃথক অভিযোগ দায়ের করেন। রাশেদ মিয়া বলেন, এঘটনার ১৪-১৫ দিন পর এসে প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করে, একটি মহল তা উস্কে দিয়ে বিষয়টি আবারও ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে। এখন মসজিদের সভাপতি সাংবাদিক ইমরুলের নামেই অপপ্রচার চালাচ্ছে! রাশেদ সহ অন্যরা বলেন, নিরপেক্ষ তদন্তে সত্যতা বেরিয়ে আসবে। এব্যাপারে বাংগরা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মানস বড়ুয়া বলেন, আমি তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করি। পরে এনিয়ে থানায় দুই পক্ষেরই পৃথক দুটি অভিযোগ তদন্তাধীন আছে। দুটি অভিযোগেই মসজিদ কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ইমরুলকে অভিযুক্ত করা হয়নি।