রাসেল মিয়া, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার মুরাদনগরে শিশু অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবীর তিন ঘন্টার মধ্যে অপহৃত শিশুকে উদ্ধার ও অপহরনকারী ৪ সদস্যকে আটক করেছে মুরাদনগর থানা পুলিশ।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের শুশুন্ডা এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় শিশুটির দাদি, চাচাসহ ৪ অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অপহৃত শিশু তাফসির ইসলাম (০৫) উপজেলার নহল গ্রামের প্রবাসী আক্তার হোসেনের ছেলে। অপহরণকারী ৪ আসামীকে গ্রেফতারের পর বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লা পুলিশ সুপারের র্কাযালয়ের সম্মেলন কক্ষে
সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, উপজেলার নহল গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে ও অপহৃত শিশু তাফসিরের বাবার চাচাতো ভাই কবির হোসেন (৩৩), দাদি জোহরা বেগম (৬০), রায়তলা গ্রামের শাহ আলমের ছেলে দেলোয়ার হোসেন (২৬) ও নাগেরকান্দি গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে রাসেল মিয়া (২২)।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, অপহৃত শিশুটির মা তানিয়া আক্তার (২৭) মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) সকালে খরচের টাকা উত্তোলনের জন্য উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ সোনালী ব্যাংকে যাওয়ার পথে ছেলে তাফসিরকে চাচাতো দেবর কবির হোসেনের মোটর সাইকেলে বসে থাকতে দেখেন।
ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে বাড়ী ফেরার পথে কবিরের স্ত্রী ফোন করে জানায় শিশু তাফসিরকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। ঘটনার ৫ মিনিট পর অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন করে ৪ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করে। টাকা না দিলে শিশুটিকে খুন করে ফেলা হবে। পরে তানিয়া বেগম তার ছেলে অপহরণ ও মুক্তিপনের বিষটি নিকট আত্বীয় আশ্রাফ মেম্বারের মাধ্যমে বেলা ৩টায় মুরাদনগর থানা পুলিশকে জানায়।
মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মনজুর আলমের নির্দেশে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নাহিদ আহম্মেদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে অপহৃত শিশু তাসফিরের চাচা কবিরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে অপহরনের বিষটি স্বীকার করে বলেন, তাসফির দাদি জোহরা বেগমের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় দেলোয়ার হোসেন, রাসেল মিয়া, নাসির, বাহাদুর, রুবেলের সহায়তায় শিশু তাফসিরকে মুক্তিপরের জন্য অপহরণ করা হয়।
পরে জোহরা বেগমকে গ্রেফতার করে অন্য আসামীদের অবস্থান শনাক্ত করে মুক্তিপনের টাকা নিয়ে যাওয়ার কথা বললে অপহরণকারী রাসেল উপজেলার নাগেরকান্দি এলাকা থেকে মুক্তিপনের টাকা নিতে আসে। এসময় পুলিশ কৌশলে রাসেলকে গ্রেফতার করে রাসেলের মাধ্যমে অপহরণকারী দেলোয়ারকে জানায় মুক্তিপনের টাকা পাওয়া গেছে। তখন দেলোয়ার তানিয়া বেগমকে মুঠোফোনে বলে মুক্তিপনের টাকা পাওয়া গেছে তোর ছেলে শুশুন্ডা কবরস্থান মসজিদে আছে নিয়ে যা।
পুলিশ অপহৃত শিশু তাফসিরকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে শুশুন্ডা কবরস্থান মসজিদ থেকে উদ্ধার করে অপহরণকারী দেলোয়ারকে রায়তলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। অপর আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পুলিশ জানায়, এবিষয়ে মঙ্গলবার রাতে তাফসিরের মা তানিয়া বেগম বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় ৬জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।