লেখক-মারুফা আফরিন

লাইফস্টাইল

ফেরদৌসি বেগম দীর্ঘদিন স্বামী – শাশুড়ির অত্যাচারের পর নিজের পায়ে দাড়ানোর মতো একটা কাজ পেলেন। যদিও দিন মজুরের চাকরি তবুওতো দিন শেষে দু’টো টাকা পান।
মধ্যাহ্ন বিরতিতে যখন বাড়ির উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন তখন বটতলার মোড় থেকে একটা তরমুজ কিনে নিলেন। বাড়িতে গিয়ে যখন বটি দিয়ে তরমুজটি কাটলেন লাল টুকটুকে রসে তার বটিটাও রসালো হয়ে গেলো। বাচ্চাদের সামনে যথেষ্ট পরিমান দিয়ে নিজের মুখের কাছে নিতেই পাশের বাসার শেফালি খালার কথা মনে পড়লো। তাকে ডেকে নিয়ে একফালি খেতে দিলেন।

না শেফালি বেগম খেলেননা।তার ঘরে পাঁচ ও সাত বছরের দু’টো নাতনী আছে। আর দশ বছরের যে নাতিটা আছে তাকে তার চাচাতো দাদা পরশুদিন তরমুজ খাওয়ালে ছোটো নাতনীরা অভিযোগ করে ওদের কেন দেয়নি?

শেফালি বেগম সহজেই বুঝিয়ে দিলেন, তারা মেয়ে তাই তাদের চেয়ে ছেলেকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়।
এসব কথা ফেরদৌসি বেগমের বুকে লাগে। ক্লাস নাইন পর্যন্ত পড়ালেখা করা ফেরদৌসি বেগম অনেকটাই বুঝদার।

দু’পয়সা আয় করে বলে তার স্বামী এখন তার সাথেই থাকে, কিছুটা ভালো আচরণ ও করে।
কিন্তু একটু এদিক সেদিক হওয়াতে আজ ফেরদৌসি বেগমের স্বামী বটি নিয়ে ধাওয়া করলে বাচ্চাদের কারনে কোনোক্রমে বেঁচে যায়। কিন্তু কিল ঘুষি থেকে রেহাই পায়না।
মনের দুঃখে যখন বটি নিয়ে নিজেই আত্মহত্যা করতে উদ্ধত হয় তখন তখন তরমুজের টুসটুসে রসের দিকে চেয়ে কিছুটা স্বস্তি পায়।
আহা! তরমুজটাও তো নিজেরে বিলিয়ে দিয়ে ফেরদৌসি বেগমের সন্তানদের তৃপ্তি করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *