প্রায় ২৩ লাখ কক্সবাজারবাসীর কাঁধে ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর বোঝা। শরণার্থী ক্যাম্পে অনিয়ন্ত্রিত শিশু জন্মহারের ফলে এ সংখ্যা বাড়ছে জ্যামিতিক হারে। স্থানীয় জনগণ ধুঁকছে নানান রকম সমস্যায়। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের স্রোত কমে আসলেও থেমে নেই। সঙ্কটের আশু সমাধান প্রলম্বিত হতে হতে আমাদের শান্তিপ্রিয় অতিথিপরায়ণ কক্সবাজারবাসীও এখন খাদের কিনারায়- মহাসঙ্কটে। স্থানীয় বাজারে দ্রব্যমূল্য বাড়তে বাড়তে আকাশচুম্বী। দরিদ্র জনগণ বেঁচে থাকতে সংগ্রাম করছে। প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। অত্যন্ত ছোট্ট পরিসরে বিশাল জনবসতির ফলে রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠী উভয়ই মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। শরণার্থীদের আশ্রয় কুটির নির্মাণ করতে গিয়ে প্রায় সাড়ে চার হাজার পাহাড় কাটা পড়েছে। ১৫০২ হেক্টর বনভূমির মধ্যে ৭৯৩ হেক্টর বনভূমি ইতোমধ্যে উজাড় হয়েছে। প্রতি মাসে রান্নার জ্বালানি হিসেবে রোহিঙ্গারা ৬৮০০ টন জ্বালানি কাঠ ও ৬০ টনের মতো বাঁশ ও উদ্ভিদের ডাঁটা সংগ্রহ করছে টেকনাফ, উখিয়া ও হিমছড়ি এলাকার সংরক্ষিত বন ও জাতীয় উদ্যান থেকে।
পুরো কক্সবাজার জেলা তথা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ। তারা বাংলাদেশের স্থানীয় জনগণের সাথে মিশে যাচ্ছে। কেউবা বাংলাদেশি পাসপোর্ট “অর্জন” করে বিদেশ পাড়ি দিচ্ছে।
কক্সবাজার শহর ও আশপাশের এলাকায় এখন অসংখ্য রোহিঙ্গার বাস। দুর্গম জঙ্গল থেকে শহরের অলি-গলি সর্বত্র তারা ছড়িয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক বছরে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে ভয়াবহ। জলোচ্ছ্বাসের মতো আগ্রাসী অর্থনৈতিক চাপের পাশাপাশি আমাদের পরিবেশ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জননিরাপত্তা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন। সমগ্র কক্সবাজারবাসী এখন চরমভাবে সঙ্কটাপন্ন।
এসব বিষয় আলোচনার জন্যে এবং এ মহাসঙ্কট হতে উত্তরণের সম্ভাব্য সমাধান খুঁজে বের করতে কক্সবাজার ফোরাম, ঢাকা আগামী ২৬শে জুলাই ২০১৯ রোজ শুক্রবার সকাল ১০.০০ ঘটিকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে “রোহিঙ্গা সমস্যাঃ মহাসঙ্কটে কক্সবাজার” শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করেছে।
উক্ত অনুষ্ঠানে দেশবরেণ্য অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, নিরাপত্তা বিশ্লেষক, আইনজীবী, উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তা, সাংবাদিক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ভুক্তভোগীরা তাদের মতামত তুলে ধরবেন।