মোঃ শহীদুজ্জামান রনি: কুমিল্লা মেঘনায় গত ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৮ নং ভাওরখোলা ইউনিয়নের ১.২.৩ নং ওয়ার্ডে উম্মে কুলসুম শান্তি (৫০) নামে এক অর্ধনারী নির্বাচন করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর থেকে হাজার ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
শান্তি ভাওর খোলা ইউনিয়নের বকশি কান্দা গ্রামের মৃত শহীদুল্লাহ এর মেয়ে জন্মের পর যখন শরীর স্বাভাবিক গঠনে পরিণত হয় তখন দেখা যায় শান্তি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ, কিন্তু তার মা-বাবা তাকে স্বাভাবিক ছেলে মেয়েদের ন্যায় লালন পালন করেন, শান্তি গরিব পরিবারের মেয়ে কিন্তু সবার সাথে খুব মিশুক ছিল, শান্তি স্বাধীনভাবে সবার সাথে চলাফেরা, খেলাধুলা, লেখাপড়া, সবকিছুই করেছে। এলাকাবাসী ও স্থানীয় মেম্বার জানান শান্তি আসলে কি এটা কেউ মনে রাখেনি, কারণ শান্তি এলাকার কোন লোকের সমস্যায় সবার আগে থাকত, কারো সমস্যা হলে রাত কি দিন এটা তার কাছে ছিল না, সে দৌড়ে যেত নারী-পুরুষ যেকারো যেকোনো সমস্যায় শান্তিকে পাওয়া যেত সবার আগে, তাই আমরা সবাই মিলে শান্তিকে আমাদের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করি। সাবেক মেম্বার বিল্লাল হোসেন জানান ছোটবেলা থেকে তার এমন উদার মন-মানসিকতা কার্যক্রম দেখে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেই এবং সে গরীব ঘরের সন্তান টাকা পয়সা নাই তাই আমরাই টাকা পয়সা দিয়ে তাকে নির্বাচনে দাঁড় করাই এবং এলাকার মানুষ তার কার্যক্রমে সন্তুষ্ট থাকায় তাকে বিপুল ভোটের মাধ্যমে পাস করায়। নির্বাচিত মহিলা মেম্বার উম্মে কুলসুম শান্তির সাথে কথা বলতে গেলে আবেগ-আপ্লুত কান্না জড়িত হয়ে বলেন, আমার যখন বুঝার ক্ষমতা হয় তখন আমি ভাবি যে আমার তো সংসার হবে না তাই আমি সিদ্ধান্ত নেই আমার এলাকার মানুষ আমার সংসার আমি আমাকে এলাকার মানুষের খেদমতে উৎসর্গ করবো এবং এই চিন্তা নিয়েই আমি কারো কোন সমস্যা শুনলেই এগিয়ে যাই, আমি গরিব আমার টাকা পয়সা নেই, তাই আমি আমার সর্বোচ্চ শ্রম দিয়ে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি, কিন্তু আমার এলাকার মানুষের মনে যে আমি এত জায়গা দখল করে নিয়েছি তা বুঝতে পারেনি মানুষ আমাকে এত ভালবাসে আমার জানা ছিল না ইনশাআল্লাহ আমার যেহেতু সংসার নাই আমি আমার এলাকার মানুষকে ভালোবেসে আমার বাকি জীবনটা উৎসর্গ করে যাব।