আশিকুর রহমান আশিকঃ
২০১৯ জেএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশিত হয়েছে। জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষায় এ বছর পাসের হার বেড়েছে। বেড়েছে জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যাও। এ বছর পাসের হার ৮৭ দশমিক ৯০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭৮ হাজার ৪২৯ জন।
সারাদেশে যখন রেজাল্ট প্রকাশিত হওয়ার পর খুশির বন্যা বয়ে যাচ্ছে সেখানে আমাদের থানায় ছেলে মেয়ে সকল বিষয়ে পাশ করায় সন্তোষ নিয়ে বসে আছি। আমাদের থানা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি থেকে শুরু করে যেকোনো চাকরিতে পিছিয়ে যাচ্ছে আমাদের ছাত্রছাত্রীগুলা। অচিরেই ঝরে যাচ্ছে মাত্র অষ্টম কিংবা এসএসসি পরীক্ষার আগে। মেঘনা থানায় সবমিলিয়ে ১২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে ;যেখানে সব মিলেয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছে মাত্র ১৭ জন। যা বিদ্যালয়ের সংখার দ্বিগুণো না। আরে ঢাকা বাদ দিলাম আমাদের পাশের থানায় খবর নেন যেখানে একটি স্কুল থেকেই জিপিএ ৫ পেয়েছে ২৫/৩০ বা তারো অধিক।খুব খারাপ লাগে এই ভেবে যে যেখানে সারা বাংলাদেশে শিক্ষার হার উন্নতি হচ্ছে সেখানে আমাদের থানার শিক্ষা ব্যবস্থা অবনতি হচ্ছে। যোগাযোগের দিক থকে ঢাকার এতো নিকটে হয়েও আমরা শিক্ষার ক্ষেত্র বাংলাদেশের মধ্যে মনে হয় সবথেকে পিছিয়ে।
নতুন বছর শুরু হলে আমাদের স্থানীয় নেতাদের দেখি নতুন বই বিতরণ করতে গিয়ে সেল্ফি তুলতে,গ্রোপ ছবি ফেসবুকে দিতে। নেতারা হাসিমুখে স্কুলে এসে সামেনের চেয়ারে বসে কোমল পানিয় পান করে চলে যায়। স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নেতাদের দাওয়াত না দিলে আবার ওরা মাইন্ড করে বসেন। স্কুলের কমিটিতে নেতাদের নাম না থাকলে ওরা হামলা করে৷ এইতো মাস খানেক আগের ঘটনা চন্দনপুর স্কুলে গর্ভনিং বডি নির্বাচন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়ে আহত হয় প্রায় ৭/৮ জন। কিন্তু সারাবছর বিদ্যালয়ের পড়াশুনার পাঠ মূল্যায়ন নিয়ে কথা তুলেন না,খবর নেন না। বিদ্যালয়ে শিক্ষকেরা ঠিকমতো ক্লাস নিচ্ছে কিনা, ছাত্রছাত্রী ঠিকমতো ক্লাস করছে কিনা। এবার আসি শিক্ষকদের কথায়, কি বলবো উনাদের কথা..! কোচিং নির্ভর পড়ার সিন্ডিকেট তৈরি করে চালায় স্কুল পলিটিক্স। ছাত্রছাত্রীরা যদি নির্দিষ্ট শিক্ষকের কাছে না পরে তাহলে ওদের ফেল নামক আতংকের কথা বলে ভয় দেখিয়ে দেয়। আর উনাদের কাছে কি পড়বে, এক একটা ব্যাচে সর্বনিম্ন ২৫/৩০ জন ছাত্রছাত্রী একসাথে কোচিং পড়ায়। ১ ঘন্টার একটা হাজিরা দিয়ে প্রাইভেট শেষ। সর্বশেষে একটা কথা বলি আমাদের শিক্ষিত সমাজ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক প্রতিটি ব্যাক্তিদের উচিত শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্যা আমাদের প্রিয় বিদ্যালয়গুলার খুজখবর রাখা। স্কুলে গভার্নিং বডিতে ভালো শিক্ষিত ব্যাক্তিত্ব সম্পন্ন লোকদের নিয়োগ দেওয়া। শিক্ষকদের জবাবদিহিতার পরিবেশ সৃষ্টি করা। তা না হলে অচিরেই ধ্বংস হয়ে যাবে আমাদের থানার শিক্ষা ব্যবস্থা।