মেঘনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মুজাফফর আলী হাই স্কুল এন্ড কলেজ গত কিছু দিন যাবদ আলোচনা সমালোচনার কেন্দ্র বৃন্দতে পরিনত হয়েছে। গত মঙ্গলবার অধ্যক্ষের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলনের পর থেকে হচ্ছে না নিয়মিত ক্লাস অভিভাবকরা বলছেন একটি সুষ্ঠ সমাধানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাস করুক এমনটাই প্রত্যাশা করি। যে যতটুকু অপরাধ করেছে তদন্দ পূর্বক সে অনুযায়ী আইনের আওতায় আসুক। অন্যদিকে অনুসন্ধানে জানা যায় নিজেদের অপকর্মকে আড়াল করতেই অধ্যক্ষের পদত্যাগ চায় একটি কুচক্রী মহল কারন বিগত ২০২১ সালে এডহক কমিটির সভাপতি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপ—কমিটির সহ সম্পাদক ফারাহ দীবা দিপ্তী ঐ সময়ে প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন, মাট ভরাট, সভাপতির গাড়ী ভাড়া বাবদ অনিয়ম আর দুর্নীতির নথিপত্র আমাদের প্রতিনিধির হাতে এসে পৌঁছেছে যাহার মধ্যে দেখা যায় শুধু অবকাঠামো উন্নয়ন বাবদ ব্যয় দেখানো হয়েছে ৮,২৪,১৫৮ টাকা, মাঠ বরাট বাবদ ব্যয় দেখানো হয়েছে ৬,৪৮,৭০০টাকা, ম্যুরাল তৈরি বাবদ ব্যয় দেখানো হয়েছে ১,৭৬,৫০০ টাকা,তৎকালীন গভর্নিংবডির সভাপতির গাড়ী ভাড়া বাবদ ব্যয় দেখানো হয়েছে ২৪,৫০০ টাকা, সর্বমোট ১৬,৭৩,৮৫৮ টাকা, যা কোনটাই বিধিমালা মোতাবেক হয়নি রেজুলেশন এর মাধ্যমে দরপত্র আহবানের সিদ্ধান্ত থাকলেও করা হয়নি।
এডহক কমিটি কোন উন্নয়ন মূলক বা অর্থ ব্যয় সংক্রান্ত ফাইলে স্বাক্ষর করতে না পারলেও ক্ষমতার দাপটে করেছেন তৎকালীন সভাপতি। ম্যুরাল তৈরিসহ বিভিন্ন উন্নয়ন ব্যয় কমিটি করা হলেও কোন ভাউচারে সভাপতির স্বামী কাজী সালাউদ্দিন একক স্বাক্ষরে আবার কোন ভাউচারে সদস্য মাহবুবুল ইসলাম মামুনের একক স্বাক্ষরে টাকা উত্তোলন করেছেন যাহার আইনগত কোন বৈধতা নেই। জানা যায় তৎকালীন সভাপতি ফারাহ দীবা দিপ্তী ২৮/০১/২০২১ ইং তারিখে প্রতিষ্ঠানের নানা অনিয়ম দেখিয়ে অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত করেন, বরখাস্তের বিরুদ্ধে শিক্ষা বোর্ডের আপিল এন্ড আরবিট্রেশন শাখায় আপিল করিলে কুমিল্লা বোর্ডের আপিল এন্ড আরবিট্রেশন শাখা তদন্ত পূর্বক প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হিসেবে বিগত ২৩/০৬/২১ ইং তারিখে পুর্নবহাল করার আদেশ দিলে গভার্নিংবডি ১৯/০১/২০২২ইং তারিখে অধ্যক্ষ পদে পুর্নবহাল করেন।
অধ্যক্ষ হিসেবে পুর্নরায় দায়িত্ব পালন কালে বিগত ২০২১ সালের এডহক কমিটির সভাপতি ফারাহ দিবা দিপ্তীসহ সদস্যদের বিরুদ্ধে অবকাঠামো উন্নয়ন ও মাঠ ভরাটের নামে ব্যয়করা টাকার জন্য ১০৩ নং সভায় তদন্ত কমিটি গঠন করিলে তদন্ত কমিটি অর্থ আত্মসাতে প্রমান পায় পরবর্তীতে ১০৪ নং সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুর্নীতি দমন কমিশন কুমিল্লা বরাবর অধ্যক্ষ বাদী হয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। অধ্যক্ষেকের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী নবম শ্রেণির মাইশা জানায় ঐদিন বড় ভাইয়েরা যা বলতে বলছে তাই বলছি আমি বিষয়টি বুঝতে পারি নাই। একই কথা বলেন ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সামিয়া।
বিষয়টি নিয়ে সাবেক গভর্নিংবডি সভাপতি ফারাহ দীবা দীপ্তি সাথে একাদিক বার ফোন করা হলেও রিসিভ করা হয়নি।
এই বিষয়ে মুজাফফর আলী হাই স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ খন্দকার মুহাম্মদ আব্দুর রউফ এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, অভিযুক্তরা মোজাফফর আলী হাই স্কুল এন্ড কলেজের কোমলমতি বর্তমান ছাত্র—ছাত্রী এবং প্রতিষ্ঠান পাগল সাবেক ছাত্র—ছাত্রী এবং প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক সহ শুভাকাঙ্ক্ষীদের কে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাকে পদত্যাগের দাবি তুলে তাদের অনিয়ম আর দুর্নীতিকে আড়াল করার জন্য ষড়যন্ত্রমূলক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। ফারাহ দীবা দীপ্তি কমিটির দুষ্ট চক্রটিই আন্দোলনের নেপথ্যে কাজ করছেন। এ বিষয়টি আমি বর্তমান সভাপতি মেঘনা উপজেলার সুযোগ্য নির্বাহী অফিসার মহোদয়কে অবহিত করেছি। আমি যদি প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন দুর্নীতি করে থাকি তা যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে আমার বিরুদ্ধে যে ধরনের আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে আমি তা মাথা পেতে নেব কিন্তু অহেতুক এবং মিথ্যা অপবাদ নিয়ে আমি পদত্যাগ করতে চাই না।
এই বিষয় নিয়ে মেঘনা উপজেলার নির্বাহী অফিসার ও মুজাফফর আলী হাই স্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিংবডি সভাপতি রেনু দাস দৈনিক আজকের মেঘনা কে বলেন বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইন আনুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।