মোঃ শহিদুজ্জমান রনি: কুমিল্লা মেঘনায় চালিভাঙ্গা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নিজাম সরকার এর হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে উত্থাল মেঘনা, দফায় দফায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক সেলিম আহমেদ ও সদস্য সচিব গাজী আলী হোসেনের নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় মানববন্ধন। এদিকে চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনসাধারণের আয়োজন ও উপস্থিতিতে চালিভাঙ্গা বাগবাজারে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে এলাকাবাসী—সর্বমহলসহ নিহত নিজামের দুই সংসারের দুই স্ত্রী এবং ছয়টি শিশু সন্তানের দাবি একটাই নিজাম সরকারের হত্যাকারী কাইয়ুম গং এর ফাঁসি চাই। নিজাম হত্যার পর শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা জানানোর জন্য নিহত নিজাম সরকারের বাড়িতে যান, কুমিল্লা ২ হোমনা—মেঘনা আসনের এমপি সেলিমা আহমেদ মেরি। সংরক্ষিত মহিলা আসন ৩৪৯ এর এমপি সেলিনা ইসলাম। মেঘনা রূপকার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ শফিকুল আলম, মেঘনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সাইফুল্লাহ মিয়া রতন শিকদার, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন শিশির, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ মিলন সরকার, রাধানগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মুজিব, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম তাজসহ আওয়ামী অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রমুখ। এ বিষয়ে নিহত নিজামের ছোট টিটু বাদী হয়ে মেঘনা থানায় এজাহার ভুক্ত ২৪ জন ও অজ্ঞাত ৬০ জনসহ ৮৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়। যারা আসামী ১. জেলা পরিষদের সদস্য মোঃ কাইয়ুম হোসাইন, ২. সফিক দেওয়ান, ৩. স্বপন দেওয়ান, ৪. মোঃ শাহিন দেওয়ান, ৫. খোকন দেওয়ান, ৬. অহিদুল্লাহ দেওয়ান, ৭. মোঃ দাইয়ান, ৮. আঃ কাদির, ৯. এবাদুল্লাহ, ১০. রুবেল, ১১. আনোয়ার হোসেন, ১২. আরিফ, ১৩. সোহেল, ১৪. ডালিম, ১৫. দুলাল, ১৬. আবুল বাশার, ১৭. রাসেল, ১৮. জহির, ১৯. ওসমান, ২০. নজরুল, ২১. জুনাইদ, ২২. কামরুল, ২৩. রবিউল্লাহ, ২৪. মাহমুদ উল্লাহসহ অজ্ঞাতনামা ৫০/৬০ জন। এই পর্যন্ত গ্রেফতার ৪ জন, মো: দাইয়ান, আঃ কাদির, আরিফ, সোহেল। চালিভাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন মেম্বার বলেন, এই কাইয়ুম এবং কাদির এই পরিবারটা ছিল বিএনপি পরিবার বিএনপির সময়ে এই এলাকার মানুষকে শান্তিতে থাকতে দেয়নি তারা অনেক অত্যাচার জুলুম করছে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগে যোগদান করে আওয়ামী লীগের ছায়াতলে বিভিন্ন নেতার ছত্রছায়া এলাকার মানুষের উপর জুলুম অত্যাচার মামলা হামলা করে কোটি কোটি টাকা কামাইছে এবং এখন এলাকায় তার একটা সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করে রাজত্ব কায়েম করছে এবং যখন এলাকার মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছে তখন সে বেপরোয়া হয়ে গেছে এবং বাইরে থেকে সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনে এই হত্যাকাণ্ড কায়েম করেছে। স্থানীয় মেম্বার আজগর প্রধান বলেন, এই কাদির মেম্বার এর ছেলে জেলা পরিষদের সদস্য কাইয়ুম এলাকার মধ্যে কুখ্যাত সন্ত্রাসী কাইয়ুম নামে পরিচিত। নিহত নিজামের বড় ভাই চালিভাঙ্গা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির বলেন, এই কাইয়ুম কিছুদিন থেকে এলাকায় বহিরাগত লোকজন নিয়ে মহড়া দিয়ে আসছে, তার রাজত্ব কায়েম করার উদ্দেশ্যে প্রথমে আমার বাড়িতে হামলা চালায় আমি একজন চেয়ারম্যান আমার বাড়িতে হামলা চালানোর কারণে এলাকার লোকজন তাকে দাওয়া করে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সে আমার ভাইকে একা পেয়ে মেরে ফেলে। মেঘনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ সাইফুল্লাহ মিয়া রতন শিকদার বলেন, নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনার পর কাইয়ুম গ্রুপের ক্যাডাররা বেশ কিছুদিন যাবত এলাকার বাইরে অবস্থান করছিল। তবে গত দুই তিন দিন যাবত এলাকায় এসে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য মহড়া দেয়া শুরু করে। এতে হুমায়ন কবির চেয়ারম্যান গ্রুপের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। আমি একদিন আগেই সার্বিক বিষয় গুলো নিয়ে ওসি সাহেবকে অবগত করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলাম। কিন্তু আমার আশঙ্কাই সত্য হলো। তিনি বলেন, দুটি গ্রুপই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। কিন্তু কাইয়ুম গ্রুপের সদস্যরা বেপরোয়া এবং দুর্ধর্ষ। মেঘনা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমরা এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য এই পর্যন্ত দুটি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ব্যাপক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করি, অভিযান অব্যাহত রয়েছে, পুলিশবাদী হয়ে একটি অস্ত্র মামলা দায়ের করেছি এবং চারজন আসামী গেস্খফতার করেছি বাকী আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। উল্লেখ্য গত ১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার সকাল সাড়ে আটটার সময় চালিভাঙ্গার বাগবাজারে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আধিপত্য বিস্তারে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে চালিভাঙ্গা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নিজাম সরকার নিহত হয়েছেন। এবং আহত হয়েছেন ১২ জন।