গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে একটি বাড়ীতে কয়েক গ্যালন দেশী মদ ও মদ তৈরীর সরঞ্জামসহ তিন
যুবককে গ্রামবাসি আটক করার পর পুলিশে সোপর্দ না করে তাদের ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় স্থানীয়
এক নারী ইউ.পি মেম্বারের ভুমিকা নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জেলার
মুকসুদপুর উপজেলার তালবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।তালবাড়ি এলাকার ইলেকট্রিক মিস্ত্রি
বাবু বিশ্বাস, ব্যবসায়ি অসীত গাইন, হৃদয় বৈদ্য ও সৌরভ বৈদ্য অভিযোগ করে বলেন, তালবাড়ি
গ্রামের লরেন্স অধিকারীর বাড়ীতে ওই এলাকার নিহার রঞ্জন হীরার ছেলে মিসেল হীরা, সন্তোষ হীরার
ছেলে সুষময় হীরা ও সুবোধ হীরার ছেলে সবুজ হীরা দেশী মদ তৈরী করে আসছিলেন। গত ১৩
এপ্রিল রাতে কয়েক গ্যালন দেশী মদ ও মদ তৈরীর সরঞ্জামসহ এলাকাবাসি তাকে হাতে নাতে ধরে
ফেলে।
এখবর পেয়ে জলিরপাড় ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী মেম্বার শিপ্রা মোহন্ত
হারু ঘটনাস্থলে যান এবং উত্তেজিত জনতার রুদ্ধরোষ থেকে ওই তিন জনকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।
কিন্তু রহস্যজনক কারনে তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ না করে বরং তিনি পালিয়ে যেতে সহয়তা করেন
বলে অভিযোগে তারা জানায়।
এছাড়া,পুলিশকে ম্যানেজ করার কথা বলে তিনি ওই তিন জনের কাছ থেকে একটি মোটা অঙ্কের
টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও তাদের অভিযোগ। ফলে ইউপি মেম্বারের এমন কর্মকান্ডে এলাকার
মানুষ হতবাক হয়ে যায় এবং জনমনে ব্যপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
ইউপি সদস্য শ্রিপ্র মোহন্ত হারু বলেন, লক ডাউন ঠিকঠাক মতো মানা হচ্ছে কিনা
পর্যবেক্ষনের জন্য ২-নং ওয়ার্ডের মেম্বার মুকুন্দ বৈরাগী ও গ্রাম পুলিশের সদস্য অনন্ত বাইনকে
সাথে নিয়ে ওই রাতে তালবাড়ী এলাকায় যাই। আমাকে দেখে ওই তিন যুবককে লরেন্স অধিকারীর
বাড়ী থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। আমি সেখানে গিয়ে মদের গন্ধ পেয়েছি। পুলিশকে ম্যানেজ
করার কথা বলে টাকা নেয়ার কথা সঠিক নয়।
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ইউপি মেম্বার শিপ্রা মোহন্তর কাছে জানতে চাওয়ায় তার মেয়ে
পরিচয়ে ( নাম প্রকাশ করেননি) এবং শিবু মন্ডল পরিচয়ে দুই জন সাংবাদিককে মোবাইল ফোনে
গালাগাল করে এবং বিভিন্ন রকম হুমকি দেয়।
তালবাড়ি গ্রামের অমৃত গাইনের স্ত্রী ছবি গাইন (৬৫) বলেন, সবসময় করোনার আতঙ্কের মধ্যে
থাকি। তারপরও প্রতিদিন রাতে ওই বাড়ীতে আড্ডা বসতো। অনেক রাত পর্যন্ত মানুষের কথাবার্তা
কানে আসতো। শুনেছি ওখানে মদ তৈরী করা হতো।
জলিরপাড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অখিল বৈরাগী বলেন, কেউ কোন অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত থাকলে
তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করা উচিত। ইউপি মেম্বার শিপ্রা মোহন্ত অপরাধীদের পুলিশে
সোপর্দ না করে ছেড়ে দিয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন।
গোপালগঞ্জের সিন্ধিয়াঘাট ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক আবুল বাশার বলেন, পুলিশ পৌছানোর
আগেই তারা পালিয়ে যায়। আপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।