বেনসন ২০, গোল্ডলিফ ১৬ টাকা করার প্রস্তাব

বাংলাদেশ
বাজারে সিগারেটের মূল্য ৯ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আসন্ন বাজেটকে সামনে রেখে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে ১০ এপ্রিল লেখা এক চিঠিতে এসব প্রস্তাব করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বাজারে চলমান প্রতিটি কম দামের সিগারেটে কমপক্ষে ৪ টাকা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে বেনসন ও গোল্ডলিফসহ সমমানের ব্র্যান্ডের প্রতিটি সিগারেটের দাম বাড়বে অতিরিক্ত ৮ টাকা। বর্তমানে বাজারে সর্বনিম্ন প্রতি সিগারেটের দাম ৫ টাকা ও উচ্চস্তরে প্রতি সিগারেট ১২ টাকা খুচরা মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে এ শলাকা গোল্ডলিফ সিগারেটের দাম হবে ১৬ টাকা এবং বেনসন সিগারেটের দাম হবে ২০ টাকা।
চিঠিতে তিনি ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে জাতীয় বাজেটে তামাকজাত দ্রব্যের ওপর কর আরোপের ক্ষেত্রে এসব প্রস্তাব বিবেচনার জন্য অর্থমন্ত্রীর ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত দেশে গড়তে তামাকের কর কাঠামো পরিবর্তন করে বিশেষ করে সিগারেটের মূল্যস্তর চারটি থেকে কমিয়ে দুটি করার পাশাপাশি ১০ শলাকা সিগারেটের ওপর সুনির্দিষ্ট অতিরিক্ত পাঁচ টাকা কর আরোপের প্রস্তাব করেছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবে সিগারেটে করারোপের ক্ষেত্রে বর্তমান নিম্ন ও মধ্যম স্তরকে একত্রিত করে একটি এবং উচ্চ ও প্রিমিয়াম স্তরকে একত্রিত করে আরেকটি স্তর করতে বলা হয়েছে। নিম্নস্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৫০ টাকা নির্ধারণ করে ৬০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক্ক এবং উচ্চস্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য কমপক্ষে ১০৫ টাকা নির্ধারণ করে ৬৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক্ক আরোপ করার পাশাপাশি সব সিগারেটের প্রতি শলাকার ওপর পাঁচ টাকা হারে সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক্ক আরোপের কথা বলা হয়েছে।
এই প্রস্তাবে বিড়ির ক্ষেত্রে মূল্য বিভাজন তুলে দিয়ে ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকার খুচরা মূল্য ৩৫ টাকা নির্ধারণের পাশাপাশি ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক্ক আরোপের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২৮ টাকা করে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক্ক এবং ৪ টাকা ৮০ পয়সা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্যের ক্ষেত্রে প্রস্তাবে ট্যারিফ ভ্যালু প্রথা বিলুপ্ত করে সিগারেট ও বিড়ির মতোই খুচরা মূল্যের ভিত্তিতে করারোপ, প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার মূল্য ৩৫ টাকা এবং গুলের মূল্য ২০ টাকা করে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক্ক আরোপের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া জর্দার ওপর পাঁচ টাকা এবং গুলের ওপর তিন টাকা সুনির্দিষ্ট শুল্প আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখা স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার চিঠিতে বলেছেন, তামাকজাত দ্রব্যের ওপর বর্তমান কর কাঠামো অত্যন্ত জটিল ও তামাকের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে এ ধরনের কর কাঠামো কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। সিগারেটে বহুস্তর বিশিষ্ট করকাঠামো চালু থাকায় বাজারে অত্যন্ত সস্তা ও সহজলভ্য সিগারেট পাওয়া যাচ্ছে। ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পরিবর্তে ভোক্তা কমদামি সিগারেট বেছে নিচ্ছে। করের ভিত্তি এবং হার খুবই কম হওয়ায় বিড়ি এবং ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য জর্দা ও গুল সহজলভ্য থেকে যাচ্ছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি তামাক ব্যবহারকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ।
এ ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জাতীয় কর নীতিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য সব তামাকজাত পণ্যে খুচরা মূল্যের ভিত্তিতে করারোপ, সুনির্দিষ্ট শুল্ক্ক পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি, সব তামাক পণ্য অভিন্ন পরিমাণে প্যাকেট বা কৌটায় বাজারজাত করা, পৃথক তামাক কর নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন (পাঁচ বছর মেয়াদি) তামাকের ব্যবহার হ্রাস ও রাজস্ব বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে বলে উল্লেখ করা হয়। সূত্রে: সময় টিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.