মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ

বিশ্ব সংবাদ

রোহিঙ্গা গণহত্যায় অভিযুক্ত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এবার রাখাইনে যুদ্ধাপরাধে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ এনেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশল। বুধবার প্রকাশিত সংস্থার প্রতিবেদনে এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়। এরমধ্যেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সঙ্গে জাতিসংঘের উন্নয়ন এবং শরণার্থী সংস্থার সমঝোতার মেয়াদ আরো এক বছর বাড়ানো হয়েছে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১৩ পুলিশ কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় বিদ্রোহীগোষ্ঠী আরাকান আর্মি নির্মূলে নামে মিয়ানমার সরকার। বুধবার এ বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। স্থানীয়দের সাক্ষাৎকার, ভিডিও, ছবি, স্যাটেলাইটের ছবি, মানবাধিকারকর্মী এবং বিশেষজ্ঞের মতামত নিয়ে তৈরি করা হয় প্রতিবেদনটি। বলা হয়, রোহিঙ্গা গণহত্যায় অভিযুক্ত মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর ২২ ও ৫৫ ডিভিশনই পশ্চিম রাখাইনে নৃশংসতা চালিয়েছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পূর্ব এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার পরিচালক নিকোলাস বেকুয়েলিন বলেন, রোহিঙ্গা গণহত্যার দু’বছর হয়নি। এবার রাখাইনের সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে গণহারে নৃশংসতা চালিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। নতুন হত্যাযজ্ঞ প্রমাণ করে, তাদের অনুশোচনা নেই। বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সামরিক সন্ত্রাসের কোনো জবাবদিহিতাও নেই। মানবাধিকার লঙ্ঘন তাদের কাছে কোনো অপরাধই মনে হয় না।

স্বায়াত্বশাসনের দাবিতে ৭ হাজার আরাকান আর্মি ওই অঞ্চলে লড়াই করে যাচ্ছে। তাদের নির্মূলে সরকারি বাহিনীর নৃশংসতায় বহু বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে অন্তত ৩০ হাজার বাসিন্দা। একে, নৃশংসতার ধারাবাহিক উদাহরণ বলে আখ্যা দিয়েছে অ্যামনেস্টি।

অ্যামনেস্টি গবেষক লরা হেউগ বলেন, মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ বন্ধে বারবার ব্যর্থ হয়েছে বিশ্বসম্প্রদায়। রক্ষা করতে পারেনি সেখানকার সাধারণ নাগরিকদের। খুবই পরিকল্পিতভাবে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এ হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া উচিত। এছাড়া সংঘাত বন্ধে এখনই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের হস্তক্ষেপ জরুরি।

এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে জবাব চাওয়া হলেও উত্তর দেয়নি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। প্রতিবেদনে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধেও বেসামরিক নাগরিকদের নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়। তবে তা অস্বীকার করেছে বিদ্রোহীরা। এরমধ্যেই রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে দেশটির সঙ্গে জাতিসংঘের উন্নয়ন ও শরণার্থী সংস্থার স্বাক্ষরিত সমঝোতার মেয়াদ আরও এক বাড়ানো হয়েছে। গেলো বছরের ৬ জুন ত্রিপক্ষীয় চুক্তিটি স্বাক্ষর হয়।সূত্র:- সময় টিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.