বিশ্ব গণমাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে উদ্বেগ

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন নিয়ে কয়েক দিন ধরেই প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বিবিসি, আল জাজিরাসহ বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যম। আন্দোলনের শুরুর দিকে গত ১১ জুন ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের চাকরি সংরক্ষণ নিয়ে ক্ষোভ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিবিসি। প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশের সরকারি চাকরিকে উচ্চ-বেতন এবং সুযোগ-সুবিধার চাকরি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। আর এই চাকরির নিয়োগে কোনো বৈষম্য যেন না হয় সেই দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন বলেও জানানো হয়।

এদিকে আজ মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশে শতাধিক শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার খবর দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা। প্রতিবেদনটিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ‘কোটাবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের টিয়ার গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের উচ্চ-বেতনের সরকারি সিভিল সার্ভিসের চাকরিগুলোতে নির্দিষ্ট কিছু গোষ্ঠীর জন্য অর্ধেকের বেশি কোটা সংরক্ষণ করা হয় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। সুবিধাভোগী ওই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কোটা পাওয়ার বিষয়টিও আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ এবং ছাত্রলীগের সংঘর্ষের কথাও বলা হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ শিক্ষার্থী সাভারের এনাম মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়েছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে আজ মঙ্গলবারও বড় ধরনের সংঘর্ষ ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার মার্কিন সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) শিরোনাম করেছে—‘বাংলাদেশে সরকারি চাকরির কোটা নিয়ে সংঘর্ষে বাংলাদেশে অসংখ্য আহত’। প্রতিবেদনের শুরুতেই ছাত্রলীগ এবং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে পুলিশের টিয়ার গ্যাসের শেল এবং লাঠিপেটা করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দিনের শুরুতেই অর্থাৎ সোমবার মধ্যরাতের পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির বাড়ির ভেতর  ছাত্রলীগ এবং পুলিশের হামলার বিষয়টি উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৪ লাখ শিক্ষার্থী স্নাতক হলেও সরকারি সিভিল সার্ভিসের কাজ করার সুযোগ পান মাত্র ৩ হাজারের মতো। আর এই চাকরির নিয়োগ যেন কোটার পরিবর্তে মেধার ভিত্তিতে হয়, সেটাই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি।

স্কাই নিউজের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ: মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলোর চাকরি বরাদ্দ নিয়ে তীব্র সংঘর্ষে কয়েক ডজন আহত’। বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ৩০ শতাংশের বেশি কোটা দেওয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।

স্ক্রলের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ‘স্লোগান’ দিয়ে শিরোনাম করা হয়। এ ছাড়া মঙ্গলবার বাংলাদেশি আন্দোলন নিয়ে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যমসহ তুর্কিয়ের আনাদুলু এজেন্সি এবং আরব নিউজও প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সবগুলো মাধ্যমই এই আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি নিয়ে নিয়ে সরকারের উদ্বেগ ও আশঙ্কার কথা উল্লেখ করেছে।

সারাদেশে আজ গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিল কর্মসূচি

সূত্রঃ আজকের পত্রিকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.