বিলুপ্তির পথে জাতীয় পাখি দোয়েল।

বাংলাদেশ

শাহীন সুলতানা, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :

বাংলা চলচ্চিত্র “প্রতিরোধ”এ ভারতীয় গায়িকা হৈমন্তী শুক্লা গেয়েছিলেন “ডাকে পাখি খোলো আঁখি, দেখ সোনালি আকাশ, বহে ভোরেরও বাতাস।”
ধানের দেশ, গানের দেশ, পাখির দেশ, এ আমাদের বাংলাদেশ। বাংলাদেশের গ্রাম-গঞ্জের মানুষের আর আগের মত দোয়েলের শিস ও বউ কথা কও পাখির ডাক শুনে ভোরের ঘুম ভাঙেনা। এমনকি চিরচেনা কোকিলের সুমধুর কণ্ঠে আর পাগল হয় না গ্রাম-বাংলার নারী-পুরুষের মন। বর্তমান সময়ে পাখিদের নাম শুধু কবিদের কবিতায়, লেখকের লেখায়, আর গায়কের গানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। শহরের পাশাপাশি গ্রাম থেকেও ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে জাতীয় পাখি দোয়েল সহ নানা প্রজাতির পাখি।
বাংলাদেশের অন্যান্য জেলা উপজেলার মতো কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার গ্রামগুলোতেও এখন আর আগের মতো নানা বর্ণের পাখি দেখা যায় না। কিছুদিন আগেও নদী-নালা, হাল-বিল ও মাঠে-ঘাটে, ক্ষেতে-খামারে বিচিত্র ধরনের পাখিদের বিচরণ ছিল।
অতীতে ফসলের মাঠে পাখিদের খাবার অনুসন্ধান স্বাভাবিক দৃশ্য হলেও এখন আর তা চোখে পড়ে না। আগের দিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে জাতীয় পাখি দোয়েল, বক, শালিক, টিয়া, ঘুঘু, বাবুই, টুনটুনি, চিল, ডাহুক, কোকিল ও কাক, উতুম, প্যাঁচাসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের আবাস ছিল। এসব পাখিদের আর আগের মতো দেখা যাচ্ছে না।
বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই জাতীয় পাখি দোয়েল, ঘুঘু, টিয়া, বাবই, শালিক, টুনটুনি, কাঁঠকাঠোরি, কোকিল, ডাহুক, মাছরাঙা, উতুম, প্যাঁচাসহ অনেক পাখির সঙ্গে পরিচিত না। এমনকি এসব পাখির ডাকও তারা কোনোদিন শোনেনি। অথচ পাখিদের কলকাকলীতেই একসময় বোঝা যেত রাতের আধাঁর শেষ হয়ে সকাল হয়েছে। কিন্তু এখন আর এসব পাখিদের কলকাকলিতে ভোরের ঘুমও ভাঙেনা।
পাখি, কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, ফসলী ক্ষেতে মাত্রা অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ ও গাছ-পালা কেটে উজাড়সহ বন-জঙ্গল নিধনই হলো এর জন্য দায়ী।
এই অবস্থায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও পাখি সুরক্ষার জন্য জনসচেতনা সৃষ্টির লক্ষ্যে নানা উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন সচেতন মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.