Site icon দৈনিক আজকের মেঘনা

হত্যা চেষ্টা মিথ্যা মামলায় আদালতকে বিভ্রান্ত করায় বাদী নিজেই জেল হাজতে।

হত্যাচেষ্টার মিথ্যা মামলা করতে এসে আদালতকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা ও প্রতারণার অভিযোগে বাদীকেই জেল হাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক। রবিবার (১২ অক্টোবর) কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট আদালতের জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ছাড়পত্র আদালতে প্রদান করায় ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসককে আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বাদী শহিদুল ইসলামের আইনজীবী মাকসুদা আকতার বেবি এসব তথ্য জানিয়েছেন। আদালত সূত্র জানায়, ভুরুঙ্গামারী উপজেলার উত্তর বলদিয়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের বরাত দিয়ে একই গ্রামের ফরহাদ হোসেন (২৩), নয়ন মিয়া (২১), শমসের আলী (৫২), ফরিদুল ইসলাম (২৫) ও তাইজুল ইসলামের নামে আদালতে নালিশি দরখাস্ত করেন। ২১ সেপ্টেম্বরের ঘটনার বিবরণ দিয়ে ওই পাঁচ জনের নামে তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ও সাক্ষী তলবের আবেদন করেন শহিদুল। আবেদনের সঙ্গে তিনি ভুরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণের কাগজপত্র দাখিল করেন। এসময় আদালতে উপস্থিত শহিদুলের মাথায় ব্যান্ডেজ ছিল এবং ব্যান্ডেজে মেডিসিনের চিহ্ন ছিল। কিন্তু বাদী শহিদুলের পান চিবানো ও আচরণ দেখে বিচারকের সন্দেহ হলে তিনি (বিচারক) বাদীর আইনজীবীকে ব্যান্ডেজ খুলে জখম দেখতে চান এবং গুরুতর জখম হলে আবেদন অনুযায়ী আদেশের আশ্বাস দেন। এসময় শহিদুলের মাথার ব্যান্ডেজ খোলা হলে তার মাথায় কোনও জখমের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। পরে আদালত উষ্মা প্রকাশ করে বাদীর আবেদন খারিজ করেন এবং আদালতকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা ও প্রতারণার অভিযোগে শহিদুলকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে আসামির কোনও ইনজুরি না থাকা সত্ত্বেও আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ভুরুঙ্গামারী থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর স্বাক্ষরিত ছাড়পত্র কীভাবে শহিদুল ইসলাম বরাবর ইস্যু করা হলো সে বিষয়ে ট্রিটমেন্ট শিট, অ্যাডমিশন রেজিস্ট্রারসহ ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসককে আগামী ২৫ অক্টোবর হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদালত জানায়, নালিশকারী শহিদুল মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আবেদনে উল্লেখিত আসামিদের হয়রানি করার উদ্দেশ্যে আদালতের চোখকে ফাঁকি দেওয়ার অপচেষ্টা করেছে এবং মিথ্যা মামলা আনয়ন করে আদালতের সময় নষ্টসহ বিচারিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। পরে আদালত আগামী ২৫ অক্টোবর পরবর্তী হাজিরার তারিখ নির্ধারণ করে আসামিকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। শহিদুল ইসলামের আইনজীবী মাকসুদা আকতার বেবির মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত থাকায় তার বিস্তারিত মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

FacebookTwitterEmailShare
Exit mobile version