বালাগঞ্জের মোরারবাজারে দু’পক্ষের সংঘর্ষের সময় মধ্যস্থতা করতে গিয়ে হামলায় নিহত রাজমিস্ত্রি ঠিকাদার আহমদপুর গ্রামের ছমির আলীর স্বজনদের কান্না থামছে না। বাকরুদ্ধ মা, স্ত্রী এবং দুই পুত্রসহ স্বজনরা ঘটনার তিনদিন পরও বিলাপ করছেন। গত বৃহস্পতিবার (০৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে দুই অবুঝ ছেলে ইমন আহমদ (১৫) ও নাঈম আহমদ (১৩) কে নিয়ে বিছানায় নিরব বসে আছেন ছমির আলী স্ত্রী ফাতেহা বেগম। এসময় তার শাশুড়ী আছারুন বেগমও যেন ছেলের মৃত্যুতে ‘অধিক শোকে পাথর’ অবস্থা। বাড়ির আশপাশ ঘরের নারী-শিশুরাও সেখানে ভিড় করে আছেন। এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে নিহত ছমির আলীর স্বজন এবং প্রতিবেশীরা সকলেই একই দাবি জানিয়েছেন, অপরাধী মছব্বির আলী যেন উপযুক্ত শাস্তি পায়। এদিকে গত মঙ্গলবার (০৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ছমির আলী (৪৫) নিহতের ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (০৮ অক্টোবর) বালাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত ছমির আলীর স্ত্রী ফাতেহা বেগম অভিযুক্ত মছব্বির আলীকে একমাত্র আসামী করে এ মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নম্বর-০৪, তারিখ : ০৮ অক্টোবর ২০২০। ধারা ৩০২ (পেনাল কোড)। বালাগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জ গাজী আতাউর রহমান এ ব্যাপারে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (০৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা অনুমান ৭টার দিকে উপজেলার দেওয়ান বাজার ইউনিয়নের মোরারবাজারে পাওনা টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। মোরারবাজারের চা-দোকানী স্থানীয় আহমদপুর গ্রামের মছব্বির আলী একই গ্রামের ক্রেতা পারভেজ মিয়া (৩২)’র কাছে পাওনা ২শ ২০টাকা চাইতে গেলে উভয় পক্ষে মারামারির সূত্রপাত হয়। এসময় দোকানী মছব্বির আলী পারভেজ মিয়াকে ছাতা দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। পারভেজ রক্তাক্ত জখম হলে পারভেজের ফুফা ছমির আলীসহ স্থানীয়রা মধ্যস্থ করতে আসেন। এসময় পারভেজের প্রতিপক্ষ মছব্বির আলী ‘ছমির আলীর বুকে কিল, ঘুষি ও স্বজোরে লাথি’ মারেন। এরপর ছমির আলীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজারে ডাক্তারের কাছে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গত বুধবার (০৭ অক্টোবর) বিকালে ময়না তদন্ত শেষে সন্ধ্যায় আহমদপুর পঞ্চায়েতি কবরস্থানে ছমির আলীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত মছব্বির আলী পলাতক রয়েছে। আলাপকালে বালাগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জ গাজী আতাউর রহমান জানিয়েছেন, অপরাধীকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।