মা হলেন কারাগারে নুসরাতের বান্ধবী মনি।

বাংলাদেশ

ফেনীর আলোচিত মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ও নুসরাতের সহপাঠী কারাবন্দি কামরুন্নাহার মনি সন্তানের মা হয়েছেন। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা.আবু তাহের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মা ও মেয়ে সুস্থ আছেন।

নুসরাত হত্যায় সরাসরি জড়িত ছিলেন কামরুন্নাহার মনি। গত ২১ এপ্রিল ১৬৪ ধারায় ফেনীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে মনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে তিনি জানান, গত ৬ এপ্রিল তিনি পাঁচ মাসের গর্ভের সন্তান নিয়েই নুসরাত কিলিং মিশনে অংশ নেন। নুসরাতের শরীর চেপে ধরে তার গায়ে কেরোসিন ঢালতে এবং আগুন দিতে সাহায্য করা ছাড়াও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বোরকার ব্যবস্থা করেন তিনি। নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়ে ঠান্ডা মাথায় পরীক্ষা দিয়েছিলেন কামরুন্নাহার মনি।

পরদিন ২২ এপ্রিল ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন মামলার অন্যতম আসামি জোবায়ের। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তিনি বলেন, রাফিকে মাদরাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে যায় পপি। সেখানে আগে থেকেই আমি (জোবায়ের) অপেক্ষা করছিলাম। আমার সঙ্গে ছিলেন মনি, শাহাদাত ও জাবেদ। রাফি ছাদে এলে আমরা তাকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে চাপ দিই। এতে নুসরাত রাজি না হলে তার হাত-পা বেঁধে ছাদে শুইয়ে ফেলি। এরপর রাফির পা চেপে ধরেন পপি, মুখ চেপে ধরেন শাহাদাত, মনি বুক চেপে ধরেন, জাবেদ কেরোসিন ঢালেন এবং আমি (জোবায়ের) দিয়াশলাই দিয়ে গায়ে আগুন ধরাই।

প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজীতে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি আলিম পরীক্ষা দিতে যান। পরীক্ষা শুরুর আগে তাকে কৌশলে ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। পরে ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাত মারা যান।

এই কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নেয় পাঁচজন। এরা হলেন- শাহাদাত হোসেন শামীম, জোবায়ের হোসেন, জাবেদ হোসেন, কামরুন্নাহার মনি ও উম্মে সুলতানা পপি।

এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল রাতে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। মামলার ১২ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বর্তমানে মামলাটির আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক চলছে।

বাদী পক্ষের আইনজীবীদের আশা, আগামী অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে এ আলোচিত মামলাটির রায় ঘোষণা হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.