ঈদ সামনে রেখে বেপরোয়া অজ্ঞান পার্টি

বাংলাদেশ

যাত্রীবেশে বাস-ট্রেনে উঠে প্রথমে শকুনের মতো শিকার খোঁজে। এরপর বন্ধু সেজে সর্বনাশের ফন্দি আঁটে। নব্বই টাকার একটি চেতনা নাশক ট্যাবলেট দিয়ে সর্বস্ব লুট করে সটকে পড়ে অজ্ঞান পার্টির প্রতারকরা। মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি প্রশাসনের তৎপরতা ছাড়া অজ্ঞান পার্টিকে ঘায়েল করা যাবে না বলে মত সংশ্লিষ্টদের।  

 

ঈদের মতো উৎসব পার্বণে পথ চেয়ে থাকা স্ত্রী-সন্তানদের কাছে উপার্জিত অর্থ পৌঁছানোর আগেই তা লুটে নেয় রাস্তাঘাটে ওৎ পেতে থাকা অজ্ঞান পার্টির প্রতারকরা। সময় সংবাদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে প্রতারক চক্রের টাকা হাতিয়ে নেয়ার নানা কূটকৌশল।

বিভিন্ন যানবাহনে উঠে যাত্রীদেরকে টার্গেট করে প্রথমে ভাব বিনিময়। পরে কৌশলে সখ্যতা গড়ে তোলার পর সুযোগ বুঝে দ্রব্য প্রয়োগ করে সর্বস্ব লুটে নেন তারা, এমনটাই জানান এক প্রতারক।

নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে টানা পঁচিশ বছর প্রতারণা পেশায় থাকা এই মানুষটির দাবি, রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে উত্তরের বিভিন্ন জেলায় শতাধিক সদস্য অজ্ঞান পার্টির সাথে যুক্ত। মূলত চেতনা নাশক ওষুধ দিয়ে সহজ সরল মানুষগুলোকে শিকারে পরিণত করে এই চক্র।

এক প্রতারক বলেন, ঈদের আগেই ভালো কাজ হয়। তাই ঈদকে সামনে রেখেই আমরা এই কাজে নেমে যাই।

অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের ব্যবহৃত চেতনা নাশক ওষুধ কখনো প্রাণহানিও ঘটায়। কোন ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ফার্মেসিগুলোতে চেতনা নাশক বিক্রি বন্ধের দাবি চিকিৎসকদের। পুলিশ বলছে, প্রতারকরা এসব ওষুধ সংগ্রহ করে ঢাকা থেকে।

রংপুর স্বাস্থ্য বিভাগের সাবেক পরিচালক ডা. অমল চন্দ্র সাহা বলেন,  ‘আমরা সরাসরি মেডিসিনের দোকানে গিয়ে প্রেসক্রিপশন ছাড়াই মেডিসিন পেয়ে থাকি। এই জিনিসটা বন্ধ করতে হবে।’

গাইবান্ধা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, তারা ঢাকা থেকে উঠে এখানে এসেই সহজ সরল মানুষের সাথে প্রতারণার সুযোগ নেয়।

প্রতি বছর ঈদ-পূজোয় ঢাকা রংপুর-মহাসড়কের গাইবান্ধা অংশে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় বাড়ি ফেরা অনেক মানুষকে। তবে সড়ক-মহাসড়ক ও রেলপথে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে নি:স্ব হওয়া মানুষের সুনির্দিষ্ট কোন পরিসংখ্যান নেই পুলিশ বিভাগের কাছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.