কারাগারে বন্দি অবস্থায় যুবলীগের ‘দুর্ধর্ষ’ ক্যাডার অমিত মুহুরী খুন

বাংলাদেশ

যুবলীগের কর্মী ইমরানুল করিম হত্যাসহ চট্টগ্রাম নগরীর নানা অপকর্মের হোতা যুবলীগ ক্যাডার অমিত মুহুরী চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় খুন হয়েছেন। নিহত অমিত যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-অর্থ বিষয়ক সম্পাদক হেলাল আকবর চৌধুরী ওরফে বাবরের অনুসারী। তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম কারাগারের জেলার নাছির আহমেদ।

 

জানা যায়, বুধবার ইফতারের পরই অমিতের সঙ্গে রিপন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। কী নিয়ে সংঘর্ষের সূচনা তা কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারেনি। এ সময় সন্ত্রাসী রিমন তার মাথায় অসংখ্য আঘাত করে। কারা কর্তৃপক্ষ শুরুতে নিজেদের বাঁচাতে ঘটনাটি আড়াল করার চেষ্টা করে।

এতে প্রাথমিকভাবে কারাগারে চিকিৎসা দিয়ে গোপনে অমিতকে সুস্থ করার চেষ্টা চালান কারা হাসপাতালের চিকিৎসকরা। কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েই কারাগারে হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে চমেক হাসপাতালের নেওয়ার পরামর্শ দেন। কারাগার থেকে অমিতকে রাত ১১টায় বের করা হয়। আর ততক্ষণে অমিতের মৃত্যু হয়।অমিত মুহুরীর মাথায় প্রায় ৩০টি সেলাই করা হয়।

চট্টগ্রাম কারাগারের জেলার নাছির উদ্দিন বলেন, ‘অমিত মুহুরী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারের ৩২ নম্বর সেলে ছিলেন। ওই সেলে থাকা অপর আসামি রিপন নাথের সাথে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে অমিতকে আঘাত করলে সে গুরুতর আহত হয়। রিমন নাথ অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারের ৩২ নম্বর সেলে রয়েছে।’

চমেক হাসপাতাল ফাঁড়ির এএসআই শীলাব্রত বড়ুয়া জানান, রাত ১১টা ২০ মিনিটে অমিত মুহুরীকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হলে তাকে নিউরোসার্জারি বিভাগের ২৮ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসকরা ৩০ মে রাত ১ টা ৪৫ মিনিটে অমিত মুহুরীকে মৃত ঘোষণা করেন।

রাত ২টায় চমেক হাসপাতাল নিউরোসার্জারি বিভাগের ২৮ নং ওয়ার্ডের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মো. খুরশিদ আনোয়ার বলেন, ‘অমিত মুহুরীর মাথায় লৌহজাত ধাতুর বড়ো রকমের আঘাত ছিল। তার মাথায় প্রায় ৩০টি সেলাই করা হয়।’ ধারালো অস্ত্র দিয়ে অমিত মুহুরীকে উপর্যুপরি আঘাত করা হয়
নগরীর নন্দনকানন এলাকার বাসিন্দা অজিত মুহুরীর বড় ছেলে অমিত। তাদের গ্রামের বাড়ি রাউজান পৌরসভা এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। এসএসসি পাস করেন রাউজান পৌরসভার সুরেশ বিদ্যায়তন থেকে। এর পর চট্টগ্রাম শহরে এসে ওমর গণি এমইএস কলেজে ভর্তি হলেও উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে পারেননি।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ১৩ আগস্ট নগরের এনায়েত বাজারের রানীরদিঘি এলাকা থেকে যুবলীগের কর্মী ইমরানুল করিমের ড্রামভর্তি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ওই বছরের ৯ আগস্ট নগরের নন্দনকানন হরিশ দত্ত লেনের নিজের বাসায় ইমরানুলকে ডেকে নেন অমিত। এরপর বাসার ভেতরেই তাকে হত্যা করা হয়। একই বছরের ২ সেপ্টেম্বর অমিতকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।সূত্র:- সময়ের কণ্ঠস্বর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.