বেনজীর ও মতিউর পরিবারের সম্পদ বিবরণী চেয়ে দুদকের নোটিশ

বাংলাদেশ

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তাঁর পরিবার এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে সরিয়ে দেওয়া সদস্য মো. মতিউর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, জব্দ হওয়া সম্পদের বাইরে এই দুই পরিবারের সদস্যদের আর কোনো সম্পদ আছে কি না, তা জানতে নোটিশ জারি করা হয়েছে।

এর আগে গত ৩০ জুন দুদক সূত্রে জানা যায়, মতিউর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সম্পদের তথ্য চেয়ে এনবিআর, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), নিবন্ধন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ এবং যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তরে চিঠি দিয়েছে দুদক।

দুদক সচিব আজ বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধানে বেনজীর আহমেদ, তাঁর স্ত্রী জীশান মীর্জা, বড় মেয়ে ফারহীন রিশতা বিনতে বেনজীর ও মেজ মেয়ে তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। তাঁদের নামে ও বেনামে দেশে-বিদেশে আরও সম্পদ রয়েছে বলে তথ্য রয়েছে। তাই আইন অনুযায়ী পৃথক পৃথক সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করেছেদুদক।

বেনজীর আহমেদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরপর তাঁদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।

সংস্থাটি এখন পর্যন্ত বেনজীর ও তাঁর পরিবারের নামে ৬৯৭ বিঘা জমি, ১৯টি কোম্পানির শেয়ার, ঢাকায় ১২টি ফ্ল্যাট, ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ৩৩টি ব্যাংক হিসাব ও তিনটি বিও হিসাব (শেয়ার ব্যবসার বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) খুঁজে পেয়েছে। আদালতের আদেশে এসব সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ করা হয়েছে। বেনজীর আহমেদ ৪ মে সপরিবার দেশ ছাড়েন।

মতিউর পরিবার

ছাগল-কাণ্ডে আলোচিত অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সংযুক্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান, তাঁর প্রথম স্ত্রী নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ, প্রথম পক্ষের সন্তান আহমেদ তৌফিকুর রহমান (অর্ণব) ও ফারজানা রহমান (ঈপ্সিতা) এবং দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতারের (শিবলী) সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারির কথা জানান দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন।

মতিউর ও তাঁর স্বজনদের নামে অন্তত ৬৫ বিঘা (২ হাজার ১৪৫ শতাংশ) জমি, আটটি ফ্ল্যাট, দুটি রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট এবং তিনটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের তথ্য পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে তাঁর প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে ঢাকা, গাজীপুর, নরসিংদী, যশোর ও নাটোরে মোট ৮৪৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ (২৫ দশমিক ৭০ বিঘা) জমি রয়েছে। আর ঢাকায় তাঁর নামে ফ্ল্যাট রয়েছে অন্তত চারটি।

২০২৩-২৪ করবর্ষের আয়কর বিবরণীতে লায়লা কানিজ তাঁর মোট সম্পদ দেখিয়েছেন ১০ কোটি ৩০ লাখ ৫১ হাজার টাকা।

মতিউর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব, মুঠোফোনে আর্থিক সেবার (এমএফএস) হিসাব ও শেয়ারবাজারের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব জব্দ করা হয়েছে। ২৪ জুন মতিউর ও তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও সন্তানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.