কুলিয়ারচরে অবৈধ গাইড বই কিনতে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করছে শিক্ষকরা।

বাংলাদেশ

শাহীন সুলতানা, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে সরকার নিষিদ্ধ অবৈধ গাইড বই কিনতে শিক্ষর্থীদের বাধ্য করছে শিক্ষকরা।

সরেজমিনে উপজেলার বেশ কয়েকটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ঘুরে জানা যায়, বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিভিন্ন প্রকাশনীর মালিক ও প্রতিনিধিদের নিকট থেকে মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহন করে সরকার নিষিদ্ধ বিভিন্ন প্রকার গাইড বই বিদ্যালয়ে পাঠ্য করে শিক্ষার্থীদের হাতে একটি করে তালিকা ধরিয়ে দিয়ে ঐ বই কিনতে বাধ্য করছে।

কুলিয়ারচর পৌর শহরের বেগম নূরুন্নাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের বলেন, তাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মতিয়ার রহমান তাদের চাপ সৃষ্টি করে বলছে অনুপম প্রকাশনীর গাইড বই ক্রয় করে বিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তারা প্রধান শিক্ষকের চাপে বাধ্য হয়ে অনুপম প্রকাশনীর গাইড বই ক্রয় করছে। কুলিয়ারচর সরকারি উচ্চা বিদ্যালয়ের অর্ধশত শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের বলেন, তাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ মোঃ ফজলুল হক বিভিন্ন ক্লাসে জ্ঞানদূত ও টিউটোরিয়াল সহ বিভিন্ন প্রকাশনীর গাইড বই কিনতে তাদের হাতে একটি করে তালিকা তুলে দিয়েছে।
একাধিক অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয়ে যেসব গাইড বই পাঠ্য করা হয়েছে। তা গুণগতমান মোটেও ভালোনা এবং গাইড বইয়ের মূল্যও বেশি। সরকার বিনামূল্যে বই দিলেও শিক্ষার্থীদের পিছনে গাইড বই কিনতে ব্যাপক অর্থ ব্যয় হচ্ছে।

অবৈধ গাইড বই পাঠ্য করার প্রসংঙ্গে বেগম নূরুন্নাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মতিয়ার রহমান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অনুপম প্রকাশনীর গাইড বই বিদ্যালয়ে পাঠ্য করার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি কি গাইড বই এনে মেয়েদের কাছে বিক্রি করছি নাকি? তাদেরকে বলেছি অনুপম প্রকাশনীর গাইড বই ক্রয় করার জন্য। আমার কাছে আসছেন, কুলিয়ারচর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সহ অন্যান্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ যে গাইড বই পাঠ্য করেছে তাদেরকে ধরেননা কেন? এ ছাড়া তিনি কোথাও থেকে কোন প্রকার টাকা গ্রহণ করেননি বলে দাবী করেন।

কুলিয়ারচর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ মোঃ ফজলুল হক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি এক একটি ক্লাসের জন্য একটি প্রকাশনীর গাইড বই নির্ধারণ করে দিয়েছি। যা ঐ ক্লাসের জন্য সফলতা বয়ে আনবে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের বলেছি তারা যদি মনে করে তাহলে তাদের পছন্দের গাইড বইও কিনে নিতে পারে।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আলতাফ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সহায়ক নোট ও গাইড বই সম্পূর্ণ অবৈধ। বিষয়টি নিয়ে উধর্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ৬ ফেব্রুয়ারী সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি নোট ও গাইড বই বিক্রি বন্ধে জেলা প্রশাসকের সহযোগিতা চেয়ে বলেন, কোন কোন গাইড ও নোট বই মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠান অনৈতিক ভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষদের আর্থীকভাবে প্রলুব্দ করে শিক্ষার্থীদের নোট ও গাইড বই কিনতে বাধ্য করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.