দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে সরকারী অনুমতি ছাড়াই, বীনা টেন্ডারে শিবনগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গাছ কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খন্দকার আবুল হাসান মিলন এর বিরুদ্ধে।অপরদিকে কর্তনকৃত গাছগুলো শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদের জায়গার বলে এলাকাবাসী দাবী করলেও,অদৃশ্য কারনে নিবর ভুমিকায় রয়েছে শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় প্রশাসন।এলাকা বাসী সুত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার ১৯জুন, কাউকে অবগত না করেই নিজের খেয়াল খুশিমতো এই গাছ গুলো কর্তন করেন শিবনগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খন্দকার আবুল হাসান মিলন।সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদ কার্য্যলয়ের প্রধান ফটকের সামনে,শিবনগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্বরে একাধিক ফলবান আমগাছ ও মূল্যবান (এন্ট্রি কড়াই) কাঠের গাছ কেটে ফেলে রাখা হয়েছে। শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদ চত্তর এলাকার বাজারের কয়েকজন ব্যবস্যায়ী জানায়, বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মানের জন্য জায়গা খালি করার কথা বলে এই গাছ গুলো কর্তন করেছে,বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খন্দকার আবুল হাসান মিলন ।এই বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক খন্দকার আবুল হাসান মিলন বলেন, প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মানের প্রয়োজনে তিনি এই গাছ গুলো কর্তন করেছেন বলে তিনি দাবী করেন।এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের গাছ কর্তনের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্তকর্তা সমসের আলী মন্ডল ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুস সালাম চৌধুরী।এছাড়া গাছ কাটার অনুমতি দেয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে দিনাজপুর সামাজ্যিক বনবিভাগের উপ-পরিচালক আব্দুর রহমান জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গাছ কর্তনের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে, কিন্তু এখনো অনুমতি দেয়া হয়নি।এদিকে যে জায়গায় গাছগুলো ছিল সেই জায়গাটি শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদের জায়গা বলে দাবী করেছেন এলাকাবাসীসহ শিবনগর ইউনিয়নের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শিবনগর ইউনিয়নে কর্মরত গ্রাম পুলিশ আব্বাস মিয়া বলেন, তিনি গত ২৫ বছর থেকে জেনে আসছেন এই জায়গা শিবনগর ইউনিয় পরিষদের, অথচ এখন দেখছেন সেখানে গাছ কর্তন করে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মানের প্রস্তুতি চলছে। শিবনগর ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নজরুল কবির রিপন বলেন, গাছ গুলো ইউনিয়ন পরিষদের জায়গায় ছিল, অথচ শিবনগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কেটে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, শিবনগর মৌজার ১২৯৪ দাগে ২১৬শতক জমির মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের ৬২শতক, শিবনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রয়েছে ১০০শতক (এক একর) কো-অপরেটিভ ব্যাংকের রয়েছে ১০শতক ও শিবনগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জমি রয়েছে মাত্র ২০শতক। বাকি ২৪ শতক নিয়ে জমির মুল মালিকের ওয়ারিশদের মধ্যে মামলা রয়েছে বলে তিনি জানান। এই ইউপি সদস্য আরো বলেন, শিবনগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০শতক জমির মধ্যে বর্তমান বিদ্যালয়ের ক্লাস রুম রয়েছে, নতুন যে জায়গাটির উপর থাকা গাছ গুলো কর্তন করে ভবন নির্মানের প্রস্তুতি চলছে তা সবই ইউনিয় পরিষদের জায়গা।তবে গাছ গুলো বিদ্যালয়ের বলে দাবী করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খন্দকার আবুল হাসান মিলন। এই শিক্ষক গাছগুলো বিদ্যালয়ের চত্তরের মধ্যে বিদ্যালয়ের জায়গায় বলে দাবী করেন।এলাকাবাসীরা জানায় ইউনিয়ন পরিষদের প্রধান ফটকের সামনে থাকা গাছ গুলো কেটে নিয়ে গেলেও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কোন পদক্ষেপ নেয়নি।এই বিষয়ে জানতে চাইলে শিবনগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মামুনুর রহমান চৌধুরী বিপ্লব বলেন, মৌখিক ভাবে গাছ কাটতে নিষেধ করা হলেও, গাছ গুলো কেটে ফেলেছে। কি ব্যবস্থা নেবেন বলে জিঙ্গেসা করলে, তিনি কোন উত্তর না দিয়ে পরে জানানো হবে বলে ফোন কেটে দেন।এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুস সালাম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের জায়গার কাছ কেটে ভবন নির্মান হচ্ছে, এই বিষয়টি শিবনগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান তাকে অবহিত করেননি, তবে তিনি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন।ফটো ক্রাপশন: ফুলবাড়ীতে সরকারী অনুমতি ছাড়াই,বীনা টেন্ডারে শিবনগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গাছ কর্তন। ছবিটি গতকাল রোববার ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্বর থেকে তোলা।