পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ.কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, প্রত্যাশা ছিলো জাতির পিতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘাতকদের এই মুজিববর্ষে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের
সম্মুখিন করবো। ঘাতকদের মধ্যে এখনো ৫ জন জীবিত রয়েছে। মুজিববর্ষে একজনকে
আনার পর তার ফাসির আদেশ কার্যকর হয়েছে এবং অন্যদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া
চলছে। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মধ্যে একজন আমেরিকা রয়েছে। তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য
ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্পকে
চিঠি লিখেছেন। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর ঘাতকেরা বিভিন্ন নামে পাসপোর্ট তৈরি করে
অনেক বছর ভালো অবস্থানে ছিলো। তাই বাকিদেরও দ্রুত দেশে ফিরিয়ে বিচারের
সম্মুখীন করা হবে। আজ শুক্রবার দুপুরে জাতির জনকের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী আরো বলেন, করোনা ভাইরাস আসার পরে মধ্যেপ্রাচ্যে অবৈধভাবে বসবাসকারী ও
অন্য বাংলাদেশীদের দেশে ফেরার জন্য চাপ প্রয়োগ করে খোনের সরকার। কিন্তু
মধ্যেপ্রাচ্যোর রাষ্ট্রগুলোর সাথে বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক থাকায় অনুরোধ করে জানাই
আমরা একসাথে এতলোক আনতে পারবো না। অল্প অল্প করে আনা হবে। তখন তারা রাজি
হয়েছে। আর করোনা কালীন সময়ে প্রবাসী যারা কষ্টে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী তাদের জন্য
বরাদ্দ দিয়েছেন ও তাদের ঘরে ঘরে খাবার পৌছে দেয়া হয়েছে। প্রবাসীরা আমাদের দেশের
সম্পদ, আমাদের ভাই বোন তাই তাদের পাশে আমরা থাকবো। যদি তারা কোন কিছু দিতে
নাও পারে তাদের আমরা হাসিমুখে গ্রহন করবো। এছাড়া মধ্যেপ্রাচ্য থেকে আগত
প্রবাসীদের কিভাবে কাজে লাগাতে পারি সে বিষয়ে চিন্তা করা হচ্ছে। যার জন্য
প্রধানমন্ত্রী ২০০ কোটি টাকার প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছেন।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, লেবানন আমাদের বন্ধু দেশ।
কোভিট ১৯ এর কারনে তাদের অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। সেখানে বাংলাদেশের প্রায় দেড় লক্ষ
প্রবাসী আছে। তার মধ্যে অনেকেরই চাকরি নেই। তাই তাদের জন্য আমরা খাবার
পাঠাচ্ছি। সেখানে বাংলাদেশীদের চিকিৎসার জন্য মেডিকেল টিম প্রস্তুত করেছিলাম
কিন্তু ওখানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছে উন্নত চিকিৎসার
জন্য ফ্রান্স মেডিকেল টিম পাঠিয়ে দিয়েছে। তারা আমাদের কাছে চাল, বিস্কুট ও
নুডুলস চেয়েছিলো সেগুলো পাঠানো হয়েছে।
আর কোভিটে মৃত্যু বরনকারীর লাশ দেশে পাঠানোর সময় এমনভাবে বাক্সবন্দি করে যে
পরিবার মৃতের মুখও দেখতে পারে না। আর মুসলিম দেশ গুগুলো ইসলামি শরীযত মোতাবেক
লাম দাফন করে। এই সময়ে লাশ আনাটা খুবই ব্যায়বহুল। তারপর ও আমরা বিভিন্ন জায়গা
থেকে লাশ এনেছি। কিন্তু অনেক দেশের এখানো ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে তাই সমস্যা হচ্ছে।
এর আগে মন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া পৌছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের
সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে তিনি পবিত্র ফতেহা পাঠ ও বঙ্গবন্ধুর রুহের
মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাযাত করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ.কে আব্দুল মোমেনের স্ত্রী সেলিনা মোমেন,
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা, পুলিশ সুপার সাঈদূর রহমান খান, জেলা
আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মাহামুব আলী খান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা
আওয়ামলীগের সভাপতি শেখ আবুল বাশার খায়ের, সাধারন সম্পাদক বাবুল শেখ, উপজেলা
চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস, পৌর মেয়র শেখ আহম্মেদ হোসেন মির্জা, সাবেক
মেয়র ইলিয়াস হোসেন, ইউএনও নাকিব হাসান তরফদার সহ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন
করেছেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক এ.এম. আমিনুল হক। এসময়
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী এ.কে.এম ওয়াহেদ উদ্দিন,
তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল হেকিম, গোপালগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ
বৈদ্য, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সাদিউল আলম চয়ন, টুঙ্গিপাড়ার উপ-সহকারী প্রকৌশলী
জাকারিয়া ফেরদৌস, নাছির উদ্দিন সহ কর্মচারীবৃন্দ উপস্তিত ছিলেন।