কুয়েতে মানবপাচারের অভিযোগে দেশটি ছেড়ে আসার বিষয়ে সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম পাপুলকে নিয়ে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম যে তথ্য প্রকাশ করেছে তা সত্য নয় বলে জানিয়েছেন তিনি। কুয়েতি সংবাদ মাধ্যমের বরাতে গতকাল সংবাদ প্রকাশ করে মানবজমিন। ওই সংবাদে মানবজমিন-এর কোনো ভাষ্য ছিল না। গতকাল প্রকাশিত সংবাদটির প্রতিবাদ পাঠিয়েছেন এমপি কাজী শহিদ ইসলাম।
এতে তিনি বলেন, প্রকাশিত সংবাদে আমি লাপাত্তা বলা হয়েছে, যা আদৌ সত্য নয়। মূলত জাতীয় সংসদ অধিবেশন চলমান থাকায় আমি বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছি এবং আমার নির্বাচনী এলাকায় নানা কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছি। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত একজন সংসদ সদস্যকে জাতীয় সংসদের অধিবেশন চলাকালে কোনরূপ খোঁজ-খবর না নিয়ে এমন একটি তথ্য প্রকাশ করা জাতীয় সংসদের অবমাননার সামিল এবং আমার নির্বাচনী এলাকার জনগণের জন্যও অবমাননাকর। কুয়েতে আমার বিরুদ্ধে কোন মামলা-মোকাদ্দমা নেই।
তদন্তের বিষয়টি কোন ক্রমেই যুক্তিসঙ্গত নয়।
তিনি বলেন, আমি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলাম। আরো অনেকেই চেয়েছেন। কিন্তু সেখানে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির একজন মনোনয়ন পান এবং নিশ্চিত পরাজয় জেনে তিনি নির্বাচনের প্রাক্কালে সরে দাঁড়ান। এনিয়ে যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমূলক।
শহিদ ইসলাম বলেন, ব্যক্তিগত জীবনে আমি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। আমি দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে কুয়েতে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে আসছি। প্রকাশিত সংবাদে আমাকে ম্যানপাওয়ার ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে কুয়েতসহ দেশে-বিদেশে আমার কোন জনশক্তি রপ্তানি বা ম্যানপাওয়ার ব্যবসা নেই। আমার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মারাফি কুয়েতিয়া কুয়েতের বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কন্ট্রাকটিং, ইঞ্জিনিয়ারিং ও সরবরাহকারী হিসেবে সুনামের সঙ্গে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
শহিদ ইসলাম বলেন, প্রকাশিত সংবাদে কুয়েতের যেসব গণমাধ্যমের সূত্র ব্যবহার করা হয়েছে সেখানে কোথাও আমার নাম নেই। ওই প্রতিবেদনে একজন এমপির কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশের কমপক্ষে ১০ জন এমপি ম্যানপাওয়ার ব্যবসা করেন। অথচ আমি ম্যানপাওয়ার ব্যবসা না করা সত্ত্বেও সেখানে কোন রকম যাচাই-বাছাই না করেই আমার নাম জড়িয়ে এ ধরনের সংবাদ প্রকাশ ঠিক হয়নি।
প্রকাশিত সংবাদে কুয়েত দূতাবাসের যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে তা সঠিক নয় বলে দূতাবাস কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে আমি জানতে পেরেছি। আমি জেনেছি কুয়েত দূতাবাস আপনার দপ্তরে প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে একটি ব্যাখ্যা পাঠিয়েছে। মানবজমিন এর হাতে আসা কুয়েতের হেড অব চ্যান্সারি মো. আনিসুজ্জামানের হাতে লেখা একটি পত্রে প্রতিবেদকের সঙ্গে টেলিফোন আলাপের বিষয়টি স্বীকার করা হয়। উল্লেখিত বিষয়ে দূতাবাস কর্মকর্তাদের সঙ্গে মানবজমিন প্রতিবেদকের কথোপকথনসহ দালিলিক প্রমাণ আমাদের হাতে রয়েছে।
প্রতিবাদপত্রে এমপি শহীদ ইসলাম দাবি করেন, এই ধরনের সংবাদে তার ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়ীক ইমেজ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তেমনি বাংলাদেশের রেমিটেন্স আয়ে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে দেশি-বিদেশি চক্র এই প্রোপাগাণ্ড চালাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।