পাহাড়ে ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে প্রশাসনের তৎপরতা
পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে গত তিনদিন ধরে চলছে টানা বৃষ্টিপাত। বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড় ধসের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় পাহাড়ের ঢালে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে তৎপরতা শুরু করেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান ও জেলা পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদের নেতৃত্বে প্রশাসনের একটি বিশেষ টিম শহরের ঝুঁকিপূর্ণ রুপনগর, শিমুলতলী, লোকনাথ মন্দির সংলগ্ন পাহাড়ের ঢালসহ বেশ কিছু এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় তারা পাহাড়ের ঢালে অনিরাপদভাবে বসবাসরতদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন।
তবে প্রশাসনের তৎপরতা থাকলেও আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনাগ্রহী ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দারা। বাড়িঘরের নিরাপত্তার অজুহাতে এখনো নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছেন বেশিরভাগ এলাকার বাসিন্দা।
রুপনগর এলাকার বাসিন্দা হোসনে আরা বলেন, প্রতি বছরই বৃষ্টি হলে প্রশাসনের লোকজন আমাদের সরে যেতে বলে। কিন্তু আমরা চলে গেলে আমাদের বাড়িঘর অনিরাপদ হয়ে যায়, ঘরের জিনিসপত্র চুরি হয়। তাই আশ্রয়কেন্দ্রে যাইনি।
আরো পড়ুন : মেঘনায় চোর সিন্ডিকেটের চার সদস্য গ্রেফতার
আরেক বাসিন্দা সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, ঝুঁকি আছে সেটি আমরা জানলেও বাড়িতে থাকা ছাড়া আমাদের কিছু করার নেই। আমাদের গবাদি পশু আছে, আমরা চলে গেলে তাদের রেখে যাওয়ার জায়গা নেই। তাছাড়া ঘরেও অনেক জিনিসপত্র রয়েছে। সেগুলো দেখার কেউ নেই। তাই ঘরেই আছি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড় ধসের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এসব এলাকার বাসিন্দাদের জন্য আমরা পৌর এলাকায় ২৩টিসহ পুরো জেলায় মোট ২৬৭টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করেছি। এরইমধ্যে পুরো জেলায় মোট ৫৬৮ জন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ প্রশাসন, স্কাউটস, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী কুইক রেসপন্স টিম গঠন করেছে এবং তারা কাজ করছে।
পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ বলেন, জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি জেলা পুলিশও দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে। প্রতিটি থানায় কুইক রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। আমরা আবহাওয়া পরিস্থিতি মনিটরিং করছি। পাশাপাশি ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার জন্যও আমরা কাজ করছি। আমরা কারো জীবনের ব্যাপারে সমঝোতা করবো না। যেকোনো ভাবেই আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাব।
জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, রাঙামাটি পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ২৩টি এবং পুরো জেলায় ২৬৭টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাহাড়ের ঢালে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন ১ হাজার ৩৬৪ জন।
সূত্রঃ ঢাকা পোস্ট