[caption id="attachment_2396" align="alignnone" width="300"] প্রতিক ছবি ।[/caption]
সোমবার রাতে পাকিস্তানে বাংলাদেশ হাইকমিশনের একটি সূত্র প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সোমবার বিকেলে রুশ বার্তা সংস্থা স্পুতনিক নিউজ দিল্লি থেকে করা এক খবরে বলেছে, কূটনৈতিক অচলাবস্থার জেরে পাকিস্তানের নাগরিকদের জন্য ভিসা বন্ধ করেছে বাংলাদেশ।
ঢাকা ও ইসলামাবাদের কূটনৈতিক সূত্রে যোগাযোগ করে জানা গেছে, গত বছরের ৬ নভেম্বরের পর থেকে পাকিস্তানে বাংলাদেশ হাইকমিশনের ভিসা কাউন্সেলর দায়িত্ব পালন শেষে দেশে ফেরেন। নতুন কর্মকর্তা যোগ না দেওয়ায় গত বছরের নভেম্বর থেকে ১৩ মে সোমবার পর্যন্ত ইকবাল হোসেন প্রেস কাউন্সেলরের পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত ভিসা কাউন্সেলরের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এ বছরের ৩০ মার্চ ঢাকায় ফেরার কথা ছিল ইকবাল হোসেনের। ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় নিজের ও মেয়ের ভিসার মেয়াদ বাড়াতে গত ৭ জানুয়ারি পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিলেন প্রেস কাউন্সেলর। অন্যদিকে, শেষ মুহূর্তের গোছগাছের জন্য বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তান যেতে ঢাকায় তাঁর স্ত্রী ও ছেলে ভিসার আবেদন করেছিলেন পাকিস্তান হাইকমিশনে।
এ বিষয়ে ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জানুয়ারির শুরুতে আবেদনের পর ভিসার মেয়াদ বাড়াতে বেশ কয়েকবার কূটনৈতিক পত্র পাঠানো হয়েছিল পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু এতে কোনো কাজ হয়নি। ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হবে কী হবে না, কিছুই আমাকে জানানো হয়নি। শুধু বলা হয়েছে বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আবার ঢাকায় আমার স্ত্রী ও ছেলে অন্তত তিনবার ভিসার জন্য পাকিস্তান হাইকমিশনে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ভিসা পাননি। ঢাকায় ফিরে যাব বলে গত ৩০ এপ্রিল সব মালপত্র পাঠিয়ে দিয়েছি। এমন এক অবস্থায়, আমার দেশে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভিসা নিয়ে এমন এক অনিশ্চয়তার পরিপ্রেক্ষিতে ইকবাল হোসেন গত ১৩ মে হাইকমিশনার তারিক হাসানকে জানিয়ে দেন তাঁর পক্ষে ভারপ্রাপ্ত ভিসা কাউন্সেলরের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। এমন এক প্রেক্ষাপটে অনানুষ্ঠানিকভাবে ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশন ১৩ মে থেকে পাকিস্তানের নাগরিকদের জন্য কোনো ভিসা দিচ্ছে না।
এদিকে, ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এই প্রতিবেদককে জানান, ইসলামাবাদে বাংলাদেশের প্রেস কাউন্সেলর মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনের ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তান হাইকমিশনের এক কর্মকর্তাকে মন্ত্রণালয়ে ডেকে এ বিষয়টি সুরাহার কথা বলা হয়েছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে পাকিস্তানের নাক গলানো শুরু নিয়ে ২০১৩ সাল থেকে ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু। পরে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে পাকিস্তানের হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও কূটনীতিকদের জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ততার অভিযোগে তাদের ঢাকা থেকে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করা হয়। এর জেরে ইসলামাবাদে বাংলাদেশের এক কূটনীতিককে সরিয়ে নিতে বলেছিল পাকিস্তান। মোটামুটি গত কয়েক বছর ধরেই এক ধরনের শীতল অবস্থার মধ্যে যাচ্ছে দুই দেশের সম্পর্ক।