রাজশাহীর পদ্মা নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (৭ মার্চ) সকালে জেলার চারঘাট এলাকা থেকে বোরকা পরা এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে বিজিবি। তবে ওই নারীর নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। তার পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। মর্মান্তিক এই নৌকাডুবিতে এখন পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
এদের মধ্যে দুই শিশু মারা গেছে। তারা হচ্ছে- কনে সুইটির মামাতো বোন রোশনি (৭) ও রতনের মেয়ে মরিয়ম খাতুন (৮)। অচেতন অবস্থায় তাদের উদ্ধারের পর হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
নৌকাডুবির ঘটনায় জীবিত উদ্ধাররা হলেন- বর রুমন আলী (২৬), রতন আলী (২৮) ও তার স্ত্রী বৃষ্টি খাতুন (২২), নৌকার মাঝি খাদিমুল ইসলাম (২৮), সুমন আলী (২৮) ও তার স্ত্রী নাসরিন বেগম (২২) এবং মেয়ে সুমনা আক্তার (৬)। তবে এখনও কনে সুইটি খাতুনসহ (২০) আরও অন্তত ২০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
এদিকে দুর্ঘটনার ১২ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ায় নিখোঁজদের বেঁচে ফেরার আশা ছেড়ে দিয়েছেন স্বজনরা।
শনিবার সকাল থেকে আবারও উদ্ধার অভিযান শুরু করেছেন ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। তাদের সঙ্গে উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে পুলিশ ও বিজিবি। নিখোঁজ স্বজনের মরদেহের আশায় বৃষ্টি মাথায় পাড়ে অপেক্ষা করছেন পরিবারের লোকজন।
রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবদুর রউফ জানান, বিজিবি ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যৌথ উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন। কিন্তু এখনও দুর্ঘটনাকবলিত নৌকা দুটির অবস্থান জানা যায়নি। ভাটিতেও তারা উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) পদ্মার ওপারের পবা উপজেলার চরখিদিরপুর এলাকার ইনসার আলীর ছেলে রুমন আলীর সঙ্গে একই উপজেলার ডাঙেরহাট এলাকার শাহীন আলীর মেয়ে সুইটি খাতুনের বিয়ে হয়। শুক্রবার (৬ মার্চ) বরের বাড়ি থেকে বর-কনেকে নিয়ে আসছিল কনেপক্ষ। সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজশাহী নগরীর শ্রীরামপুর ডিসির বাংলো এলাকায় পদ্মা নদীতে দুই নৌকার সংঘর্ষে ডুবে যায় নৌকাগুলো। এতে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন কনেসহ অন্তত ২০ জন। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রাজশাহী সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, পবা-মোহনপুর আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দীন ও জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক। তারা হাসপাতালে গিয়েও উদ্ধারদের খোঁজ নেন।