রূপগঞ্জে হাসেম ফুডস লিমিটেডের অগ্নিকাণ্ড ও হতাহতের ঘটনায় গঠিত নাগরিক তদন্ত কমিটি কারখানা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় কিছু অর্ধগলিত হাড় পড়ে থাকার দাবি করেছেন নাগরিক তদন্ত দলের সদস্যরা। তবে, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স নারায়ণগঞ্জ জেলার কর্মকর্তা বলছেন,‘ভুল তথ্য’। শনিবার (১৭ জুলাই) দুপুরে নাগরিক তদন্ত কমিটির সদস্যরা ভবনটি পরিদর্শনে শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। হাড়গুলো আগুনের ঘটনায় পুড়ে মারা যাওয়া কোনো নারী শ্রমিকের বলেও তাঁদের ধারণা।
নাগরিক তদন্ত দলের সদস্য ও গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা ছয় তলা ভবনটির চার তলার দক্ষিণ–পূর্ব কোণের একটি পোড়া স্তুপে হাড়গুলো পড়ে থাকতে দেখেছি। হাড়গুলো একটি পাজামা দিয়ে মোড়ানো। ধারণা করা হচ্ছে, এটা কোনো নারী শ্রমিকের কোমড়ের অংশ। চার তলায় প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এই দুর্গন্ধ রানা প্লাজা, তাজরিনের ঘটনার পরও আমরা পেয়েছিলাম। এই হাড়গুলো এখনো কেন পড়ে আছে, আসলেই মৃত্যুর সংখ্যা কত, এ বিষয়গুলো আরও তদন্ত করতে হবে।
পরিদর্শন শেষে অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, হাড়গুলো আমরা দেখেছি। পুরো ভবনেই বিভিন্ন মালামালের পোড়া স্তুপ আছে। আমরা তদন্তের সময় এই বিষয়গুলো বিবেচনা করব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স নারায়ণগঞ্জ জেলার উপসহকারী পরিচালক তানহারুল ইসলাম জানান, আমরাও তদন্ত কমিটির সঙ্গে ভবন পরিদর্শনে ছিলাম। এমনকি ওনারা যখন এ বলছিলেন, আমরা উপস্থিত অনেককে নিয়ে আবারও ওই স্থানটি দেখিয়েছি। হাড় ছিলো না। আর পাজামা থাকার কথা অবান্তর। যে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আমাদের ফায়ার ফাইটাররা নিয়ন্ত্রন নিতে গিয়ে তাদের হেলমেডই গলে যাওয়ার অবস্থা হয়েছিলো, সেখানে পাজামা থাকে কি করে। যে বা যারা এমন তথ্য দিচ্ছে তা রং মিছিয়ে ছড়াচ্ছে। এ গুলো ভুল তথ্য।
নাগরিক তদন্ত কমিটিতে আছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, আইনজীবী মাহবুবুর রহমান ইসমাইল, ডা. মো. হারুন-রশিদ, প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন, অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খান, গবেষক ও সাংবাদিক প্রিসিলা রাজ ও মাহা মির্জা, শিল্পী ও সংগঠক বীথি ঘোষ, বাংলাদেশ শ্রম ইনস্টিটিউটের ট্রাস্টি গোলাম মুর্শেদ, গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের সভাপতি শবনম হাফিজ, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম সবুজ, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী রেজাউর রহমান লেনিন।
উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই বিকেলে রূপগঞ্জের হাসেম ফুড লিমিটেডের ৬ তলা কারখানা ভবনে আগুন লাগার ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ শ্রমিক। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ১৮টি ইউনিট টানা প্রায় ২৯ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এবং ৪৮ ঘন্টা লেগেছিলো পুরোপুরি আগুন নিভতে। ওই ঘটনায় জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
আগুনে পুড়ে মৃত্যুর ঘটনায় রূপগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ূন কবীর বাদী হয়ে কারখানামালিক আবুল হাসেম, তাঁর চার ছেলে, প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ আটজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হাসেম ফুড কারখানার মালিক আবুল হাসেমসহ আটজনকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গত ১৪ জুলাই আদালতে হাজির করা হলে কারখানার মালিক আবুল হাসেমসহ ছয়জনকে কারাগারে পাঠান বিচারক। জামিন পান কার