পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় প্রাণঘাতী বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৩০ জন। আফ্রিকার এই দেশটির উত্তরাঞ্চলে দফায় দফায় বিস্ফোরণে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। রোববার (৩০ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্ব বোর্নো প্রদেশে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে অন্তত ১৮ জন নিহত ও আরও ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এর মধ্যে শনিবার একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে সন্দেহভাজন বোমা হামলায় ছয়জন নিহত এবং অন্যদের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বোর্নো প্রদেশের জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, সন্দেহভাজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীরা গোওজা শহরে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠান এবং হাসপাতালে হামলা চালায়। মূলত এই প্রদেশটি গত ১৫ বছর ধরে জঙ্গি গোষ্ঠী বোকো হারামের বিদ্রোহের কেন্দ্রে রয়েছে। এই সংঘাত ও সহিংসতায় ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। ২০১৪ সালে বোর্নো প্রদেশের চিবোক শহর থেকে ২৭০ জনেরও বেশি স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ করে বোকো হারাম আন্তর্জাতিক কুখ্যাতি অর্জন করেছিল।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শনিবার একের পর এক বিস্ফোরণে ১৮ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে, যার মধ্যে শিশু, প্রাপ্তবয়স্ক এবং গর্ভবতী নারীও অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। কিছু স্থানীয় মিডিয়া প্রাণহানির সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে রিপোর্ট করেছে। যার মধ্যে নাইজেরিয়ার ভ্যানগার্ড এবং দিস ডে সংবাদপত্র জানিয়েছে, বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৩০ জন নিহত হয়েছেন। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কারফিউ জারি করা হয়েছে। তবে এখনও কেউ হামলার দায় স্বীকার করেনি।
বিবিসি বলছে, ২০১৪ সালে গোওজা শহরটি দখল করে নিয়েছিল বোকো হারাম। তবে ২০১৫ সালে নাইজেরিয়ান বাহিনী এটি আবারও পুনর্দখল করে। কিন্তু তারপর থেকে সন্ত্রাসী এই গোষ্ঠীটি শহরের কাছে আক্রমণ এবং লোকজনকে অপহরণের মতো কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। গত বছরের নভেম্বরে প্রতিবেশী ইয়োবে প্রদেশে একটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠান থেকে ফেরার সময় বোকো হারাম বিদ্রোহীদের হাতে ২০ জন নিহত হয়। গ্রামবাসীরা তথাকথিত ফসলের ট্যাক্স দিতে অস্বীকার করার পরে জঙ্গিরা গুরোকায়েয়া গ্রামে হামলা চালিয়ে ১৭ জনকে হত্যা করার একদিন পর এই হামলাটি ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে।