রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের আশপাশের এলাকা থেকে সন্দেহভাজন ১০ ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ এই ১০ জনকে আটক করে ধানমন্ডি থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরান হোসেন প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আজ ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের আশপাশের এলাকায় লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান করছেন অনেক লোকজন। এই এলাকায় কেউ এলেই তাঁদের থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তাঁরা। কোথায় যাচ্ছেন, কেন এসেছেন, তা জানতে চাওয়া হচ্ছে। এমনকি পরিচয়পত্র ও মুঠোফোন দেখা হচ্ছে। ৩২ নম্বর সড়কে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
এই এলাকায় কখনো কাউকে কাউকে ধাওয়া দিতে দেখা গেছে। কাউকে মারধর করতেও দেখা গেছে। অবস্থান নেওয়া ব্যক্তিরাই এই এলাকায় আসা সন্দেহভাজন ১০ জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন।
ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরান হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের আশপাশে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের মুঠোফোন ঘেঁটে দেখেছেন অবস্থান নেওয়া ব্যক্তিরা। সন্দেহ হয়েছে—এমন ১০ জনকে তাঁরা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। এসব ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে জানিয়েছেন। আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের পুলিশের পাশাপাশি সেনাসদস্যদের কাছে তুলে দেওয়া হচ্ছে।
এলাকাটিতে অবস্থানকারী চার ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁরা লাঠিসোঁটা নিয়ে গতকাল বুধবার রাত থেকে এখানে আছেন। তাঁরা কাউকে স্মৃতি জাদুঘরের দিকে যেতে দিচ্ছেন না।
আজ ১৫ আগস্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এই দিনে বিপথগামী একদল সেনাসদস্য ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের এই বাড়িতেই বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে সপরিবার হত্যা করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের গত প্রায় ১৫ বছরের শাসনকালে প্রতিবছর ১৫ আগস্ট বহু মানুষ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আসতেন বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। এদিন ৩২ নম্বরের এই বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।
আওয়ামী লীগ ও দলটির সহযোগীরা ১৫ আগস্টে ‘পাল্টা অভ্যুত্থানের’ চেষ্টা করতে পারেন—এমন খবর পেয়েছে বলে দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা বলেছেন, কেউ এ ধরনের কোনো চেষ্টা করলে প্রতিহত করা হবে। আজ সবাইকে রাজপথে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।