৩০ মার্চ ২০২০ করোনার প্রভাবে জনজীবনে নেমে এসেছে কালো মেঘ। দিনমুজুরেরা পরেছে ঘোর বিপাকে। করোনার প্রভাবে কর্মহীন হওয়ায় তাদের আয়-উপার্জনের পথ একবারে বন্ধ। যারা দিন এনে দিন খায় তাদের চুলা জ্বলে না ঘরে। কী এক নিদারুণ বোবা আর্তনাদ বাতাসে ভেসে আসে! দুস্থ ও নিরন্ন মানুষের সে নিরব চাপা কান্না ক’জনাই বা শুনতে পায়?
তবে হ্যাঁ এ কথা শাশ্বত সত্য যার হৃদয়ে বিন্দু মাত্র মায়া আছে,আছে মানুষের কষ্ট বুঝার পারদ শক্তি তারা কিন্তু সব কিছু ছাপিয়ে শুধু মানুষকে মানবতার চাদরে মুড়িয়ে ধরে শান্তি পায়। অসহায় মানুষের কল্যাণের তরে সমাজসেবিরা বিলীন হয়ে যায় এমন দৃষ্টান্তও বিরল আছে।অসহায় মানুষের প্রেম ভালোবাসা গায়ে মাখতে, সে ভালোবাসার রঙে নিজেকে রঙিন করতে কেউ কেউ গৃহের মায়া ভুলে গিয়ে জলাঞ্জলি দেয় ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়াও। কার্পণ্যহীন নিখাঁদ ভালোবাসা আর মানবতা ছড়িয়ে দিতে ছুটে চলে কিছু তরুণ -যুব ,কিছু অধম্য সাহসী সমাজকর্মী ও কিছু জনপ্রতিনিধিত।
অবশ্য অসহায় মানুষের ভালোবাসার রং গায়ে মেখে ঐসব পরোপকারী মানুষগুলো স্বর্গীয় স্বাদ আস্বাদন করে। মানবতার সৌরভ বিলিয়ে দিতে তারা পাগলপারা হয়,স্বজীবনও বিসর্জন দেয় কেউ কেউ। তেমনি কিছু সমাজ সেবকদের কথা আজ তুলে ধরছি কলমের ঘূর্ণিতে। মহামারি করোনার প্রভাবে দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মানুষ আজ কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
কর্মহীন হয়ে পরছে দিনমুজুর থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত পরিবারের চাকুরে ও ব্যবসায়ীরাও। এ সংকট মোকাবেলায় শুধু মানবতা,পারস্পারিক হৃদ্যতা ও সহমর্মিতা প্রয়োজন।
কেনো জানি মনে হয়,করোনার ঝড়ে সারা বিশ্বের মানুষের হৃদয়ে একটা আমূল পরিবর্তন হচ্ছে!ধীরে ধীরে গজিয়ে ওঠছে নতুন প্রেমময় মানবিক বিশ্ব। দাউদকান্দি পৌর মেয়র নাইম ইউসুফ সেইন এর সহযোগীতা ও সঠিক দিক-নির্দেশনায় ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর খন্দকার বিল্লাল হোসেন সুমনকে প্রধান সমন্বয়ক করে একঝাঁক তরুণ যুবকপাখি ডানা মেলে ঝাপিয়ে পরে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে। এমন মহৎ উদ্যোগকে যারা বাস্তবায়ন করতে নিরলস কঠোর প্ররিশ্রমের কষ্ট ভাগা-ভাগি করে নিয়েছেন আর্তমানবিক
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য মধু,প্রনয়,আবির,গোবিন্দ, হিমেল,ফাহিম মুন্সি ও রুদ্রসহ আরো অনেকেই।
পৌরসভার ৯ টি ওয়ার্ডের ৫০০ পরিবারের মাঝে আজ ২৯ মার্চ রোববার সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত প্রায় ৩০ জন যুবকের প্ররিশ্রমের বিনিময়ে ৩ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল,১ কেজি সয়াবিন তেল,১ কেজি পেঁয়াজ ও ১ কেজি করে ডাল প্যাকেটিং করে এসব খাদ্য সামগ্রী দুস্থ কর্মহীন মানুষের মাঝে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিতরণ করেন।
মানবতার তরুণ ফেরিওয়ালারা এ সমাজ ও গোষ্ঠীকে একটি পজেটিভ বার্তা দিয়ে বুঝিয়ে দিলো,দেশ আমার দায়িত্বও আমার।
কাউন্সিলর সুমন খন্দকার বলেন,” অসহায় মানুষের জন্য,নিরন্ন মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে মনে এক ধরনের প্রশান্তি অনুভব করি।এলাকার আর্তমানবতাবাদী রক্তিম সূর্য সংগঠন নামের একটি সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সদস্যদের সদিচ্ছায় আমরা কিছু পরিবারের মুখে হাসি ফুটিয়েছি তাদের মধ্য তৌফিক রুবেল,আবুল বাশার, রনি বেপারি,রাজু মোল্লা,রানা সরকার, রিটু সরকার, মেহেদি হাসান, ইকবাল, কাজী আনাস ও সাইফুলসহ তাদের সাপোর্ট ছিলো বলেই আমরা এ কাজটি সহজে করতে পেরেছি।তাই আমি বলবো জাতির সংকটময় মহুর্তে জনসেবামূলক কাজে তরুণদের দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিত্তবানরাও অসহায় মানুষের সাহায্যার্থে এগিয়ে আশা নৈতিক দায়িত্ব ও উচিত। তিনি আরো বলেন, সমাজ সেবামূলক যে কোনো কাজে এলাকার ছোট -বড় সকলের সম্মিলিত ভাবমূর্তি ও একতা থাকলে সহজেই অসাধ্য কাজকে সাধন করা যায়। এ কাজে যারা শ্রম, মেধা ও অর্থ দিয়ে সহযোগীতা করেছেন তাদের প্রতি আমি যারপরনাই কৃতজ্ঞতা চিত্তে আশির্বাদ করছি।
তিনি উত্তর প্রজন্মের প্রতি আহ্বান রেখে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন,এমন জীবন করিও গঠন মরণে হাসিবে তুমি কাঁদিবে ভুবন।”