নাজমুল করিম ফারুক :কুমিল্লার তিতাসে ছেলে নির্যাতনের কারণে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে মা। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টায় উপজেলার কড়িকান্দি ইউনিয়নের বন্দরামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত লতিফা বেগম (৫৭) আবুল কাশেমের স্ত্রী ও মজিদপুর গ্রামের ছইন উদ্দিনের মেয়ে। উক্ত ঘটনার পর ছেলে মো: শাকিল (৩৭) পলাতক রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ শাকিলের স্ত্রী জিয়াসমিনকে আটক করে থানা হেফাজতে রেখেছে।
নিহতের ছেলের স্ত্রী জিয়াসমিন আক্তার জানান, আমার বিয়ে হয়েছে বারো বছর হয়। আমাদের সংসারে কোন সন্তান নেই। আমার বিয়ের অনেক আগেই আমার শশুড়ের সাথে শাশুড়ির ছাড়াছাড়ি হয়। আমার শাশুড়ি বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে ছেলেকে বড় করে। এক পর্যায়ে কুমিল্লার আবুল কাশেম নামে এক লোকের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে আমার শাশুড়ি স্বামীকে নিয়ে দাউদকান্দির পেন্নাইয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন।
প্রায় ৮ বছর আগে বন্দরামপুরে ১২শতক জমি কিনে এখানে বাড়ি করে আমরা বসবাস করছি। উক্ত বাড়ির ৯ শতক জমি শাকিলের নামে ও ৩ শতক জমি শাশুড়ির নামে রেজিষ্ট্রি করা হয়েছে। আমার শাশুড়ি কিছু দিন আমাদের এখানে আবার কিছু দিন পেন্নাই স্বামীর সাথে থাকে। এনিয়ে ছেলের সাথে মার অনেকবারই ঝগড়াঝাটি হয়েছে। কাল (সোমবার) শাশুড়ি এখানে আসলে শাকিল তার মাকে দু’দফা মারধর করে। রাতে আমার শাশুড়ি পাশের বাড়িতে ঘুমায়। সকালে আমাদের এখানে এসে বলে আমি বিষ খেয়েছি। এক পর্যায়ে সে মারা যায়। এদিকে স্থানীয় লোকজন সকালে শাকিলকে পাকড়া করলে শাকিল পালিয়ে যায়।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আবুল কাশেম মুন্সি জানান, শাকিল সোমবার দুপুরে তার মাকে মারধর করলে সে আমার কাছে এসে ছেলের নির্যাতনের কথা বলে অভিযোগ করে। আমি শাকিলকে আমার কাছে পাঠানোর জন্য বলি। শাকিল বিষয়টি ভালোভাবে না নিয়ে আবার তার মাকে মারধর করে। সকালে জানতে পারি শাকিলে মা বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
তিতাস থানার ওসি সৈয়দ আহসানুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি এবং লাশ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে সে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। শাকিলকে ধরার জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।