তাহিরপুরে করোনা ভাইরাস সংক্রমনের ভয়কে উপেক্ষা করে বোর ধান কাটা পুরো দমে শুরু হয়েছে। উপজেলার সর্ববৃহৎ শনি ও মাটিয়ান সহ ছোট বড় হাওর জুড়ে এখন বোর ধানের সুবাস বইছে। অনেক কষ্টের সোনালী ফসল দেখে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। কৃষকরা দিনরাত পরিশ্রম করে সোনালী ফসল ঘরে তুলতে হাওরে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সেই সঙ্গে ব্যস্ততা বেড়েছে কৃষক পরিবারের গৃহিনীদেরও।
জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে সুনাগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আহবানে জেলার প্রতিটি উপজেলায় হাওরের কৃষকদের উৎসাহ যোগাতে এক যোগে ধানকাটা শুরু হয়েছে। উপজেলা সদরের উজান তাহিরপুর গ্রামের সম্মুখে শনি হাওরপাড়ের নুরুল হকের বোর জমিতে ধান কাটার উদ্বোধন করেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিজেন ব্যানার্জী।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলা ২৩টি ছোট বড় হাওরে ১৭ হাজার ৫ শত ২৭ হেক্টর জমিতে বোর ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে, গত বছরের তুলনায় এ বছ বোর ফলন ভাল হবে।
হাওর পাড়ের কৃষক সুজন ও ইসলাম উদ্দিন জানান, বোরো ধান রোপন মৌসুমে হাওরের পানি দ্রুত নিষ্কাশন না হওয়ায় অসমে ধান রোপন করেন কৃষকরা। যার কারণে এখনও হাওরের বেশির ভাগ জমির ধান কাঁচা রয়েছে। এই নিয়ে কৃষকরা উৎকন্ঠায় আছেন। একদিকে মরণ ব্যাধি করোনা ভাইরাস সংক্রমনের ভয়, অন্যদিকে আবহাওয়ার আগাম সতর্কবার্তা। আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় মঙ্গলবার থেকে উপজেলার সবকটি হাওরে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। করোনার ভাইরাসের ভয়ে বাহিরের ধান কাটার শ্রমিকরা না আসায় শ্রমিক সংকটও আছে। তারা আরো বলেন, এবার বোর ক্ষেতে ধান ভাল হয়েছে। দিন ভাল থাকলে কৃষকরা সহজে ফসল ঘরে তোলতে পারবে।
শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খসরুল আলম বলেন, করোনা ভাইরাসের ভয়ে স্থানীয় শ্রমিকরা ধান কাটতে ভয় পাচ্ছেন। যারা কাটতে ইচ্ছুক তারাও অধিক মজুরি চাচ্ছেন। তিনি বলেন, ধান কাটার শ্রমিকদের সবার বাঝানো উচিত, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ধান কাটলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসান উদ দৌলা জানান, এবার হাওরে বোর ধানের ভাল ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২০/২৫ দিনের মধ্যে কৃষকরা গোলায় ধান তোলতে পারবেন।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জী বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধের পাশাপাশি হাওরের বোরো ধান দ্রুত ঘরে তোলতে উপজেলা প্রশাসন থেকে আগাম নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কৃষকদের। তিনি বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।