গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪০৩ জন। যা আগের যে কোনো সময়ের রেকর্ড ভেঙেছে। এবার ডেঙ্গুর লক্ষণ ভিন্ন হওয়ায় বাড়ছে প্রাণহানির আশঙ্কা। উচ্চ তাপমাত্রা, তীব্র ব্যথা না থাকায় চিকিৎসকের কাছে যেতে যেমন দেরি হচ্ছে, তেমনি চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়েও আছে বিভ্রান্তি।
এক্ষেত্রে ডেঙ্গু ম্যানেজমেন্ট ন্যাশনাল গাইড লাইন ২০১৮ এর নির্দেশনা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, প্লেটলেট কমে গেলেই রক্ত দিতে হবে এই ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে রক্তের ঘনত্ব নির্ণয় করে দিতে হবে চিকিৎসা।
সাত বছরের নীপা ডেঙ্গুর শক সিনড্রোম থেকে ফিরে এখনও ঢাকা শিশু হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে।
কর্তব্যরত নার্স বলেন, যখন রোগী আমাদের কাছে আসে তখন রোগী শকে ছিল। যখন রোগীর হেমাটোক্রিটটা নরমাল থেকে কমে যায় তখনই আমরা রোগীকে রক্ত দেই।
একটা সময় ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় প্লাটিলেট হিসাবই সবার আগে বিবেচনা করা হত। আর প্লাটিলেট লাখের নিচে নামলেই দেয়া হতো রক্ত। তবে ডেঙ্গু ম্যানেজমেন্ট ন্যাশনাল গাইড লাইন ২০১৮ তে এসেছে নতুন নির্দেশনা। তাই চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্লাটিলেট দিয়ে রোগীর অবস্থা জানলেও ১০ হাজারের নিচে নামলে কিংবা অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের আগে দিতে হয় না রক্ত।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, প্রাচীন পর্যায়ে আমরা সূচ অথবা প্লাজমা দিয়ে শক রোগীকে প্রাইমারি ম্যানেজমেন্ট করার চেষ্টা করি। সেই সময়ে সব রোগীর রক্ত প্রয়োজন হবে তেমন নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে রক্তের অণুচক্রিকা নয় গুরুত্ব দিতে হয় ঘনত্বের দিকে।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. এম মনির হোসেন বলেন, যে পর্যায়ে রোগী শকে চলে যায় ওটার নাম ডেঙ্গুর শক সিন্ড্রোম। ডেঙ্গুর শক সিন্ড্রোম মানে হলো রক্ত নালীর পুরগুলো খুলে যাওয়া, প্লাজমা লিকেজ হয়ে যায়। প্লেটলেট এখন আমরা দিচ্ছি না, প্লেটলেট এখন জরুরি না। কিন্তু প্লেটলেট দেখে আমরা রোগীর অবস্থান সনাক্ত করি। রোগী খারাপের দিকে যাচ্ছে নাকি ভালোর দিকে।
আগে থেকেই হার্ট, কিডনি সমস্যা আছে, শিশু, প্রসূতি মা কিংবা যাদের ওজন একটু বেশি তাদের চিকিৎসায় বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।