চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বলদিয়া গ্রামে করোনার উপসর্গ নিয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২৯শে এপ্রিল) সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফেরার দুই ঘণ্টা পর ওই যুবকের মৃত্যু হয়।
ওই যুবকের নাম জাহিদুল ইসলাম (৩০)। তিনি ওই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
জাহিদুলের মৃত্যুর পর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগ তার নমুনা সংগ্রহ করেছে। তার এবং আশপাশের বেশ কয়েকটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
জাহিদুলের বাবা আব্দুর রাজ্জাক জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত ছিল জাহিদুল। সোমবার রাতে শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি শরীরে জ্বর আসলে অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। পরদিন সকালে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আব্দুর রাজ্জাকের অভিযোগ, করোনার উপসর্গ থাকায় আমার ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তির পরও কোনো চিকিৎসক ঠিকমতো তার চিকিৎসা দেয়নি। এতে সে আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে পরদিন সকালে (বুধবার) তাকে রাজশাহী রেফার্ড করে আমাদের হাতে ছাড়পত্র ধরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর জাহিদুলকে বাড়িতে নিয়ে আসার দুই ঘণ্টার মাথায় সে মারা যায়।
এদিকে, করোনার উপসর্গ নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তির পরও জাহিদুলের চিকিৎসায় কেন গাফিলতি করা হয়েছে? কেনই বা তার শরীরের নমুনা সংগ্রহ না করে তাকে রাজশাহী রেফার্ড করা হলো।
জাহিদুলের মৃত্যুর পর এমন নানা প্রশ্ন নিয়ে উত্তেজনা ছড়াতে থাকে গোটা এলাকায়।
খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিকুর রহমানের নির্দেশে স্থানীয় প্রশাসনের একটি টিম জাহিদুলের বাড়িসহ আশপাশের বাড়ি লকডাউন করেন। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিমও নিহতের শরীরের নমুনা সংগ্রহ করেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম কবির জানান, মঙ্গলবার সকালে ওই রোগী শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এরপর তাকে আইসোলেশন ইউনিটে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বুধবার সকালে রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে রাজশাহী রেফার্ডের পরামর্শ দেওয়া হয়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার জানান, বিষয়টি অবহিত হওয়ার পরই আমি জাহিদুলের শরীরের নমুনা সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছি। ওই এলাকা লকডাউন করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসকদের কোনো গাফিলতির অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন জেলা প্রশাসক।