Site icon দৈনিক আজকের মেঘনা

টিটুর সঙ্গে মরে গেল তার পরিবারের স্বপ্নও

প্রাইভেট পড়িয়ে সংসারের হাল ধরার চেষ্টা করেছিলেন মোস্তফা কামাল টিটু। বিয়েও করেছিলেন বছর খানেক আগে। স্বপ্ন ছিল আরও এগিয়ে যাওয়ার। কিন্তু মসজিদে লাগা আগুনে পুড়ে মারা গেলেন টিটু। সঙ্গে পরিবারের স্বচ্ছলতার স্বপ্নও ভেঙে চুরমার হলো।

নারায়ণগঞ্জের তল্লায় বায়তুস সালাত জামে মসজিদে শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে অন্যদের সঙ্গে আগুনে মারাত্মকভাবে দগ্ধ হন চাঁদপুরের মোস্তফা কামাল টিটু (২৮)।

অনেকের সঙ্গে আহত টিটুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শনিবার দুপুরে মারা যান তিনি। এদিন সন্ধ্যায় চাঁদপুর শহরের জিটি সড়কের গ্রামের বাড়িতে তার মরদেহ নিয়ে আসা হয়। জানাজা শেষে রাতেই তার দাফন সম্পন্ন হয়।

জানা গেছে, সেখানকার করিম মিজির বড় ছেলে মোস্তফা কামাল টিটু। মাত্র এক বছর আগে চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া এলাকার লুবনা আক্তারকে বিয়ে করেন টিটু। নারায়ণগঞ্জের তল্লা এলাকায় শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়ে সংসার চালাতেন তিনি। নিহত টিটুর বন্ধু আলইমরান সরকার জানান, সংসারে একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন টিটু। তার অকাল মৃত্যুতে পরিবারে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।

এদিকে, শনিবার সন্ধ্যায় মোস্তফা কামাল টিটুর মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় তাদের আহাজারিতে উপস্থিত প্রতিবেশীদের চোখ ভারী হয়ে যায়।

চাঁদপুর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করেন মোস্তফা কামাল টিটু। পড়াশোনা শেষে কোথাও স্থায়ী চাকরি না পেয়ে ছুটে যান নারায়ণগঞ্জে। সেখানে একটি ম্যাচে থেকে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়ে আয়ের পথ তৈরি করেছিলেন তিনি। তল্লা বাইতুল সালাত জামে মসজিদে নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন টিটু।

শুক্রবার রতে এশার নামাজ আদায় করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার তিনি। পরে সন্তানের এমন দুঃসংবাদ মুঠোফোনে পোঁছে বাবা করিম মিজির কাছে। ওই রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজের শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ছুটে বাবা। কিন্তু পরের দিন জীবিত নয়, আদরের সন্তানের মরদেহ নিয়ে ফেরেন হতভাগা এই বাবা।

FacebookTwitterEmailShare
Exit mobile version