বিদেশে থেকেও হাজিরায় স্বাক্ষর, ৮ মাসেও ব্যাখ্যা দেননি শিক্ষিকা

কুমিল্লা

কুমিল্লার মুরানগরে ১৫ দিনের ছুটি নিয়ে ৩০ দিন সিঙ্গাপুরে থেকে হাজিরা খাতায় পুরো মাসের স্বাক্ষর দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকা। বিষয়টি নজরে আসলে তাকে শোকজ দেওয়ার আট মাসেও তার ব্যাখ্যা দেননি তিনি। অভিযুক্ত শিক্ষিকার নাম তাসলিমা আক্তার। তিনি উপজেলার বলীঘর পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের দায়িত্বে রয়েছেন। এনিয়ে উপজেলা জুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

এছাড়াও ওই শিক্ষিকা বিদেশে অবস্থান করে স্কুলে উপস্থিত দেখিয়ে বেতন উত্তোলন করে ভোগ করেছেন। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর সুপারিশও করেছেন খোদ সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ২০২৩ সালের ২৩ অক্টোবর এর সঠিক ব্যাখ্যা চেয়ে তিন কার্য দিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হলেও শিক্ষক তাসলিমা আক্তার গত ৮ মাসেও নোটিশে কোনো জবাব দেননি।

 

বিদেশে থেকেও হাজিরায় স্বাক্ষর, ৮ মাসেও ব্যাখ্যা দেননি শিক্ষিকা

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বলীঘর পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তাসলিমা আক্তার সিঙ্গাপুর প্রবাসী স্বামীর কাছে যাওয়ার জন্য শিক্ষা অফিস থেকে ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট থেকে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত ১৫ দিনের ছুটি নিয়ে বিদেশে গমন করেন। কিন্তু ১৮ আগস্ট তিনি কর্মস্থলে যোগদান করার কথা থাকলেও তিনি দেশে ফিরেন ৩ সেপ্টেম্বর। এক মাস পর দেশে ফিরে বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায় ১৫ দিনের ছুটি বাদে বাকি ১৫ দিন উপস্থিতি হাজিরায় স্বাক্ষর করে বেতন উত্তোলন করেন।

বিদ্যালয়ে যোগদান করার জন্য ৫ সেপ্টেম্বর পূর্ববর্তী আগস্ট মাসের ২০ তারিখে (পেছনের তারিখে) বিদ্যালয়ে যোগদানের জন্য শিক্ষা অফিসে আবেদন জমা দেন। পেছনের তারিখে দেওয়া এ আবেদনে সুপারিশ করেন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ হায়াতুন্নবী ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আম্বিয়া খাতুন। জালিয়াতির মাধ্যমে করা এ আবেদনে সহকারী শিক্ষা অফিসারের সুপারিশ করা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে।

তাসলিমা আক্তারের ছুটি ও যোগদানপত্র নিয়ে অনিয়ম পরিলক্ষিত হওয়ার তৎকালীন শিক্ষা কর্মকর্তা মোতাহের বিল্লাহ তার কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে ৩ কার্যদিবস সময় দিয়ে শোকজ করলেও শিক্ষিকা সেই নোটিশের কোনো তোয়াক্কাই করেননি।

বিদেশে থেকেও হাজিরায় স্বাক্ষর, ৮ মাসেও ব্যাখ্যা দেননি শিক্ষিকা

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষিকা তাসলিমা আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, এ ব্যাপারে আমি আপনাকে বলতে বাধ্য নই। যা বলার শিক্ষা অফিসে বলবো। বলীঘর পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আম্বিয়া খাতুন জাগো নিউজের কাছে নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের সুযোগ দিয়েছেন বলে শিকার করেছেন। উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ হায়াতুন্নবী বলেন, অনিয়মের বিষয়ে আমি অবগত নই। আমি যে তারিখে আবেদনপত্র পেয়েছি সেই তারিখেই সুপারিশ করেছি।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক জাগো নিউজকে বলেন, আমার পূর্ববর্তী শিক্ষা কর্মকর্তা ওই শিক্ষিকাকে শোকজ করার বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে দুয়েক দিনের মধ্যে তাকে শোকজ করব। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সফিউল আলম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে পরে বিস্তারিত জানাতেপারবো । সূত্রঃ জাগো নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.