গোপালগঞ্জের কোটালীপড়ায় বাঙ্গি-তরমুজের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি।

ঢাকা বিভাগ গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় এ বছর বাঙ্গি-তরমুজের বাম্পার ফলনে কৃৃষকের মুখে হাসি
ফুটেছে। বিগত বছরগুলোতে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার কারনে বাঙ্গি- তরমুজের গাছ জমিতেই নষ্ট হয়ে যায়। এবছর
অতিরক্ত বৃষ্টি না হওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নি¤œাঞ্চলে বৃষ্টির পানি না জমায় বাঙ্গি ও তরমুজ চাষের
সুযোগ হয়েছে। ফসলও হয়েছে ভাল। বৃষ্টি না হওয়ায় চাষিরা ঠিকমত ফসল তুলতে পেরেছে। উপজেলার তেঁতুল
বাড়ি,মাছপাড়া, নলুয়া,বুরুয়া, কুমুরিয়া,চকপুকুরিয়া ও হিজল বাড়ি গ্রামের মাঠে বাঙ্গি ও তরমুজ
ফসলের ব্যপক চাষ করা হয় ।এই সব এলাকার কৃষকেরা এবছর বৃষ্টি না হওয়ায় লক্ষ লক্ষ টাকার বাঙ্গি-তরমুজ বিক্রি
করেছে।
উপজেলার মাছপাড়া গ্রামের তরমুজ চাষী ফুলচাঁদ অধিকারী বলেন, আমি পর পর চার বছর বাঙ্গি-তরমুজের চাষ
করে অনেক টাকা ঋণ হয়ে ছিলাম, কারণ ছিল অতিরিক্ত বৃষ্টি। এবছর বৃষ্টি না হওয়ায় অন্যের জমি বর্গা করেও
ভাল লাভবান হয়েছি।
উপজেলার লখন্ডা তুলসী বাড়ী গ্রাম থেকে আসা তরমুজ ক্রেতা দেবব্রত বিশ্বাস বলেন,এই এলাকায় প্রচুর
তরমুজ চাষ হয়ে থাকে, প্রতিবছরই খাবারের জন্য আমি তরমুজ ক্রয় করতে এখানে আসি,তাই এবছরও তরমুজ ক্রয়
করতে এসেছি, কিন্তু এবছর প্রচুর দাম হওয়ায় চারটি তরমুজ কিনেছি।
বাঙ্গি-তরমুজ আড়্ধসঢ়;ৎদার রাজীব হাজরা ও রসিক বাড়ৈ বলেন, আমাদের আড়ৎ, প্রায় দেড় মাস চালু করেছি,এই
দেড় মাসে এখানে এক কোটি টাকার উপরে শুধু বাঙ্গি বিক্রি করেছি, ১০ দিন যাবৎ তরমুজ বিক্রি শুরু
করেছি ,ইতিমধ্যে প্রায় বিশ লক্ষ টাকার তরমুজ বিক্রি হয়েছে । এখানে নয়টি আড়ৎ রয়েছে প্রতিদিনই
এইভাবে প্রত্যেক আড়তে বাঙ্গি ও তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের কারণে উপজেলা নির্বাহী
অফিসারের উদ্যোগে অনলাইনের মাধ্যমে বাঙ্গি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডাঃ অরবিন্দু কুমার রায় বলেন, জেলায় এবছর বাঙ্গি-
তরমুজের ফলন হয়েছে প্রচুর। বৃষ্টি না হওয়ায় বাঙ্গি-তরমুজ চাষে কৃষকরা ভালো ফলন পেয়ে লাভবান হয়েছে।
অন্যান্য বছরের ক্ষতি এবছর পুষিয়ে নিতে পারবে কৃষকরা। বাঙ্গি-তরমুজ বিক্রিতে তাদের যাতে কোন সমস্যা
না হয় সেমত ব্যবস্থা ও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, অনলাইনের মাধ্যমে বাঙ্গি- তরমুজ বিক্রি করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আশে পাশে হাট-বাজার গুলোতেও যাতে বাঙ্গি-তরমুজ বিক্রি করা যায় সে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। করোনা
ভাইরাস সংক্রমনের কারনে কৃষকদের বাঙ্গি তরমুজ বিক্রিতে কোন অসুবিধা হয়নি।
উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পার্থ প্রতিম বৈদ্য বলেন, বিগত বছরগুলোতে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের
কারণে কৃষকের স্বপ্ন বৃষ্টির পানিতেই ধুয়ে যায়। কিন্তু এবছর আবহাওয়া ভাল থাকায় কৃষকের মুখে হাসি
ফুটেছে। এবছর বাঙ্গি তরমুজের ব্যপক ফলন হয়েছে এবং কৃষকেরা নির্বিঘেœ বিক্রি করায় লাভবান হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ নিটুল রায় বলেন, এবছর এলাকায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে তরমুজ এবং বাঙ্গি
চাষ করা হয়। প্রতিবছর অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে কৃষকের অর্থকারী ফসল তরমুজ ও বাঙ্গি নষ্ট হয়ে যায়। এবছর
বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকেরা অনেক লাভবান হয়েছে এবং তাদের মুখে হাসি ও ফুটেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.