মুহাম্মদ কাইসার হামিদ, বিশেষ প্রতিনিধি :
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কাউসার আজিজ বলেন, দেশে লবনের কোন সংকট নেই। দেশে অস্থিতিশীল সৃষ্টি করার লক্ষে একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে। তারা সরকারকে বিপদে ফেলার জন্য চক্রান্ত করছে। যারা এ সরকারকে চায়না তারা বাজারকে অস্থিতিশীল করে বেড়াচ্ছে। এ দেশে ৬লক্ষ মেট্রিকটন লবন যদি একমাসে লাগে, তাহলে যে পরিমান লবন এ দেশে মজুদ আছে ৬ মাসেও তা শেষ হবেনা। তিনি মঙ্গলবার (১৯নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে কুলিয়ারচর বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে কুলিয়ারচর বাজারে " লবন নিয়ে গুজব " শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরো বলেন, এ দেশকে যারা ভালোবাসে তারা এ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষূন্ন হোক এমন কোন কাজ করবেনা। পেয়াজ নিয়ে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হওয়ার পর কেজিতে ১ দিনে ১০০টাকা করে কমে গেছে। আরো কমে সহনীয়তা পর্যায়ে ফিরে আসবে এমন ব্যবস্থা করছে সরকার।
পিয়াজের রেশ কাটতে না কাটতেই আাবারো সরকারকে বিপদে ফেলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে লবনের দাম বৃদ্ধি হওয়ার গুজব ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে চক্রান্তকারীরা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পরই বঙ্গ বন্ধুর সোনার বাংলাদেশে যেমন ভাবে বিভিন্ন রকম ক্রাইসিসের সৃষ্টি করে ছিল তেমনি ভাবে এখনও ওইরকম ক্রাইসিস সৃষ্টি করার পায়তারা করছে তারা । আপনারা সতর্ক থাকবেন। ডিলার পর্যায়ে লবনের মূল্য বৃদ্ধি করার কোন সুযোগ নেই। যদি কোন কোম্পানি লবনের দাম বাড়াতে চান তাহলে সরকারকে অবহিত করেই দাম বাড়াবে। লবনের দাম বৃদ্ধি হয়েছে এমন কোন তথ্য এখনো আমাদের নিকট আসেনি। তাই আপনারা কেউ গুজবে কান দিবেন না। যদি কোন ব্যবসায়ী লবন সহ নিত্য প্রয়োজনী কোন দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি করে গ্রাহকদের নিকট বিক্রয় করে তাহলে ভূক্তা অধিকার আইন অনুযায়ী ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে এসব গুজব রোধে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করুন। গুজব রোধে আমি ব্যক্তিগত ভাবে উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মাইকিং এর ব্যবস্থা করবো। বিভিন্ন মসজিদে নামাজের আগে লবনের মূল্য বৃদ্ধি এটা " গুজব " এ বিষয়ে অবহিত করানোর জন্য ইসলামি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ইমামদেরকে জানানো হবে।
এ সময় কুলিয়ারচর বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুফতি ইলিয়াছ মাহমুদ কাসেমী রাসেলের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,
কুলিয়ারচর বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলাল উদ্দিন, উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, কুলিয়ারচর থানার সেকেন্ড অফিসার এস আই মোহাম্মদ আজিজুল হক, এস আই মোঃ আজহারুল হক, এস আই মোঃ আবুল কালাম আজাদ, সাংবাদিক মুহাম্মদ কাইসার হামিদ, জামিয়া আরাবিয়া নূরুল উলুম কুলিয়ারচর মাদ্রাসার শিক্ষক জহির বিন রুহুল সহ বাজারের ব্যবসায়ীবৃন্দ।
আলোচনা সভায় অনেক ব্যবসায়ী বলেন, যে লবন (লুজ) দুইদিন আগে প্রতি বস্তা ৬৬০ টাকা বিক্রয় করেছে সেই বস্তা গুজব ছড়িয়ে যাওয়ার পর তারা ৭০০-৮০০টাকা করে বিক্রয় করেছে। যারা লবণ ক্রয় করতো (প্যাকেট) ১ কেজি করে তারা আজ প্রতি কেজিতে ৫থেকে ২০ টাকা বেশী মূল্য দিয়ে ১০থেকে ২০ কেজি করে কিনে নিয়েছে। বাজারে ছিলো লবন কেনা বেচার হিরিক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার প্রতিটি হাট বাজার ও বিভিন্ন দোকানে লবন কেনার ক্রেতা ছিলো অনেক বেশী। আজ অনেক দোকান লবন শূন্য হয়ে গেছে বলেও জানা যায়।