মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীরে শরীয়ত মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেছেন, ধর্মীয় ও আদর্শবান রাজনীতিবিদদের অভাবে দেশে আজ রাজনৈতিক দূরাবস্থা চলছে। ইসলামের শত্রæরা বারবার কলা-কৌশলে ইসলামের উপর আঘাত করে চলছে। বিধর্মীদের আমদানী করা মানবরচিত তন্ত্র-মন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সরকার ও বিরোধী দল ব্যস্ত।
কোন মানবরচিত তন্ত্রমন্ত্র ও শাসন ব্যবস্থায় দেশে কখনোই শান্তি আসতে পারে না। একমাত্র কুরআন-সুন্নাহর অনুকরণে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই মানবতার কল্যাণ ও শান্তি আসতে পারে। হাফেজ্জী হুজুর রহ. এর স্বপ্ন ছিল দেশে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠা করা। বার্ধক্যে উপণীত হয়ে তিনি তওবার ডাক দিয়ে ইসলামী রাজনীতির পথ সুগম করেছেন। আজ চতুর্দিকে ইসলামের সুশীতল বাতাস বইতে শুরু করেছে। দেশে ইসলামী হুকুমতের পথ সুগম হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শান্তিকামী মানুষ খেলাফতের পতাকাতলে সমবেত হচ্ছে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে ধারাবাহিক কর্মসূচী চালিয়ে যেতে পারলে কোন শক্তিই খেলাফত প্রতিষ্ঠার মিশন রুখতে পারবে না।
তাগুতি শক্তিকে পরাভূত করে খেলাফত রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করতে হবে। আজ শনিবার সকাল ৯টায় নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জে মুন্সী কমিনিউটি সেন্টারে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত জেলা সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনের উদ্যোক্তা আলহাজ্ব আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, হাফেজ্জী হুজুর রহ. এর খলিফা মাওলানা হাতেম আলী, হাটহাজারী মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা মুমতাজুল করীম (বাবা হুজুর), খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা হাবীবুল্লাহ মিয়াজী, শায়খুল হাদীস মাওলানা ওমর ফারুক স›দ্বীপী, মাওলানা এহতেরামুল হক উজানভী, দলের নায়েবে আমীর মাওলানা মুজীবুর রহমান হামিদী, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি সুলতান মহিউদ্দীন, হাজী জালালুদ্দীন বকুল, মাওলানা ফিরোজ আশরাফী, মাওলানা আতাউর রহমান আরেফী, মুফতি ইলিয়াছ মাদারীপুরী, মাওলানা শেখ সাদী, মাওলানা ইমরান হুসাইন কাসেমী, মাওলানা মুশফিকুর রহমান জামাল প্রমূখ। মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বলেন, আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার কাজ করতে হবে।
কেন্দ্র হতে বিভাগ, জেলা, থানা, ওয়ার্ড, পাড়া-মহল্লায় তৃণমূলে খেলাফতের দাওয়াতকে ছড়িয়ে দিতে হবে। যতদিন পর্যন্ত কোরআনের শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা না হবে ততদিন পর্যন্ত এর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, যোগ্যতা, সততা ও কর্তব্যপরায়ণ মানসিকতা নিয়ে খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য মেহনত করে যেতে হবে। আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে। আদর্শ নাগরিক তৈরির মাধ্যমে দেশ ও জাতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে অপশক্তির মোকাবেলা করতে হবে।
মুফতি সুলতান মহিউদ্দীন বলেন, খেলাফত শাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে হযরত মুহাম্মাদ (সা:) যে ইনসাফ ও ন্যায় বিচার বিশ্ববাসিকে উপহার দিয়ে গেছেন তাতে মুসলমানসহ সকল ধর্মের মানুষের ন্যায্য অধিকার রয়েছে। ভিন্ন মতাবলম্বীদের ইসলামের ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ করে সুসংহত জাতিতে রূপান্তরিত করেছিলেন এবং প্রতিষ্ঠা করেছিলেন অনন্য সাম্য ও সৌহার্দভিত্তিক আদর্শ রাষ্ট্র ব্যবস্থা। সভাপতির ভাষণে আলহাজ আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সি বলেন, আমি হাফেজ্জী হুজুর রহ. ও খেলাফত আন্দোলনকে ভালবাসি। কেননা বাংলাদেশে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার স্বপ্নদ্রষ্টা হলেন হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ.। আর ইসলামী দলগুলোর মূল দল হল বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন। আমি মনে করি ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠায় খেলাফত আন্দোলনের বিকল্প নেই। আমি আমৃত্যু এই দলের একজন একনিষ্ঠ কর্মী হয়ে কাজ করে যাবো ইনশাআল্লাহ। সম্মেলনে আলহাজ আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সিকে আমীর ও মাওলানা শেখ শাদীকে সাধারণ সম্পাদক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট খেলাফত আন্দোলন নারায়াণগঞ্জ জেলা কমিটি গঠন করা হয়।