স্টাফ রিপোর্টার নিজস্ব প্রতিবেদক :খুলনায় ৩ সাংবাদিকের নামে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় নিন্দার ঝড় উঠেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা সুরক্ষা আইন অমান্যকরে এবং সাংবাদিকতার নীতি বির্সজন দিয়ে একটি চক্র খুলনার ৩ সাংবাদিকের নামে পত্রিকায় মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করায় সর্ব মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
উল্লেখ্য, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ বাস্তবায়নের লক্ষে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। তারপরেও থেমে নেই খামখেয়ালী লেখালেখি। মানুষের মানসম্মান ক্ষুন্য করে মানবাধিকার লঙ্ঘিত করা হচ্ছে।
অজানা মিথ্যা খবর কোন প্রচার মাধ্যমে প্রচার করা আইনগত দন্ডনীয় অপরাধ জেনেও বন্ধ হচ্ছেনা লেখালেখির প্রতিযোগিতা। অদক্ষ অনাঅভিজ্ঞ অশিক্ষিত কিছু লোকের সাংবাদিকতায় প্রবেশের কারণে প্রকৃত সাংবাদিকতা পেশা কুলুষিত হচ্ছে। যে কারণে পেশাদার সাংবাদিকতায় অনেকটা বেগ পেতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ২১ এপ্রিল খুলনার শিরোমনিস্থ বিটিসিএল এর টেলিযোগাযোগ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অনিয়মের সংবাদ দৈনিক ঢাকা রিপোর্টে প্রকাশিত হয়। ওই দিন দৈনিক ঢাকা রিপোর্ট খুলনা ব্যুরো চীফ্ আবু দাউদ ইমরান, সিআইএনটিভি২৪ নিউজ পোর্টালের সম্পাদক আবু হামজা বাঁধন , দৈনিক প্রবাহ প্রতিনিধি শেখ মনিরুজ্জামান বাবুল, শেখ ইউনুস আলী ও আবু জাফর খাঁ বাইকযোগে গিলাতলায় অবস্থিত শেফা মিনারেল ওয়াটার কারখানার সামনে দিয়ে আসার পথে কারখানার মালিক ও ম্যানেজারের সাথে কারখানার ছবি তোলা নিয়ে বাকবিতন্ড হয়।
এক পর্যায় মিনারেল ওয়াটার কারখানার মালিক মাওঃ আবুল বাশারের সমার্থিত সহযোগিদের হামলা থেকে পুলিশ সংবাদকর্মীদের উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে আসে।
পরবর্তীতে সৃষ্ট বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে থানা প্রশাসনের মাধ্যমে ১নং আটরা গিলাতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মনিরুল ইসলাম ও ৬নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য হাফিজ খাঁনের মধ্যস্থতায় দু’পক্ষে আপোষ মিমাংসা হয়। এ সময় পুুলিশ বিস্তারিত ঘটনা উল্লেখ করে থানায় একটি সাধারন ডায়রী করে রাখে।
এ ঘটনার ২দিন পর স্থানীয় একটি স্বার্থান্বেষী মহল পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কয়েকটি আঞ্চলিক পত্রিকায় মিথ্যা বানোয়াট তথ্য সরবরাহ করে সাংবাদিক আবু দাউদ ইমরান, মনিরুজ্জামান বাবুল , আবু হামজা বাঁধন , শেখ ইফনুস আলী ও ব্যবসায়ি জাফর খাঁর বিরুদ্ধে একটি কাল্পনিক সংবাদ প্রকাশ করতে সহায়তা করে।
গুজব ও উদ্যেশ্যে মূলক সংবাদ প্রকাশ হওয়ারপর থেকে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয় ।
ভুক্তভোগি গণমাধ্যমকর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, নাটকীয় কায়দায় সংবাদ প্রকাশের পরথেকে গণমানুষের বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মূখীন হতে হচ্ছে। মূলত মান সম্মান ও পারিবারিক ঐতিহ্য ধ্বংস করার অপচেষ্টায় দীর্ঘদিন যাবৎ মেতে রয়েছে একটি চক্র।
যারা এ ধরনের তথ্য সরবরাহ করেছে তাদের বিরুদ্ধে নানা অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ থাকলেও তাঁরা নিজেদেরকে ধোঁয়া তুলসী পাতা মনে করছে। এমনকি প্রকৃত শিক্ষা ও নীতি আর্দশের বহির্ভূত হয়ে বিভিন্নভাবে সাংবাদিকদের শায়েস্তা করার জন্য এরুপ মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ করেছে।
গণামধ্যমকর্মী আবু হামজা বাঁধন জানান, শিরোমনি বিসিক শিল্প নগরী সহ বিভিন্ন জায়গায় দীর্ঘদিন যাবৎ কিছু হলুদ সাংবাদিক কথিত সাংবাদিক সংগঠনের নামে নিরব চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে। এ বিষয় নিয়ে আমি একাধিকবার প্রতিবাদসহ সংবাদ প্রকাশ করেছি। এরপর থেকে ওই হলুদ সাংবাদিকরা আমার পিছনে ষড়যন্ত্রের নীল নকশার ছক আকঁতে থাকে।
সাংবাদিক আবু হামজা বাঁধন আরো বলেন, আমি চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে , শেষ পর্যন্ত আমার সংবাদকর্মী বন্ধুদের কাছ থেকে চাঁদাবাজের তকমা উপহার পেলাম। তবে যেখানে সংশ্লিষ্ট থানায় গত ২১ এপ্রিল চাঁদাবাজির বিষয় কোন অভিযোগ, মামলা বা জিডি হয়নি, তবে কিভাবে পত্রিকায় আমাদের নামে এরুপ বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ হলো, সে বিষয় আমি হতবাক হয়ে যাচ্ছি।
অন্যদিকে, দৈনিক ঢাকা রিপোর্ট খুলনা ব্যুরো চীফ্ আবু দাউদ ইমরান জানান, আমি ১৯৯৬ সাল থেকে কয়েকটি আঞ্চলিক পত্রিকাসহ জাতীয় দৈনিকে সুনামের সাথে কাজ করে আসছি। তবে নিয়তির পরিহাস দীর্ঘ ২৩ বছর সাংবাদিকতারপর পত্রিকায় আমাকে ভূঁয়া সাংবাদিক বলে আখ্যায়িত করছে।
ক্ষুরাধর লেখনির মাধ্যমে মাদক, সন্ত্রাস, দূর্নীতির বিরুদ্ধে পত্রিকায় ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করে আসছি। এমনকি খুলনায় শ্রমিক আন্দোলনে লেখনির মাধ্যমে পাশে ছিলাম। এছাড়া স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অবহেলিত জনপদ-জনগোষ্ঠির সংবাদ প্রকাশ করেছি। যেখানে দূর্নীতি সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তোলার কারণে সমাজের এক শ্রেণীর দালাল টাউট বাটপার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়াতে আজ কঠিন ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হলো ।
সেদিন ছিল পবিত্র শবে বরাত । বছরের একটি নিয়ামতের দিন, তবে থেমে ছিল না দালাল চক্রের চক্রান্ত। তুচ্ছ অতি সাধারন একটি ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য তাঁরা বিভিন্ন মহলে তদবির করে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
তিনি আরো বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৯ ধারা অনুযায়ি আমাদের বিরুদ্ধে উদ্যেশ্যেমূলকভাবে হেয়োপ্রতিপন্ন করার জন্য মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করেছে। সুতরাং আমরা আইনের আশ্রয়গ্রহণ করেছি।
আটরা গিলাতলা ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য খাঁন হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা ঘটনার দিন সকলে মিলে বিষয়টি মিমাংসা করেছি। কারণ সকলেই আমাদের এলাকার লোক। এখন আমরা যদি বলে একটা আপনাদের (সাংবাদিক) আরেক গ্রুপ লেখে দশটা।
ইউপি সদস্য আরো বলেন, আমাকে এক সাংবাদিক ফোন দিয়েছিল। তাঁকে বলেছিলাম ঘটনার সময় আমি ছিলাম না, তবে আপোষ মিমাংসায় ছিলাম।
পেশাদার সাংবাদিকদের নিয়ে এমন উদ্দেশ্যপ্রণোদীত ও ষড়যন্ত্রমুলক ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন- পরিবেশ সংরক্ষণ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সাংবাদিক সোসাইটির চেয়ারম্যান জি.এম শহিদুল ইসলাম, সংস্থার সচিব ও দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার আছিফুর রহমান, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ সংস্থার কেন্দ্রীয় মহাসচিব বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিষ্ট এম মমিন, মানবাধিকার প্রতিদিনের যুগ্ম সম্পাদক ও অনলাইন দৈনিক ফুলতলা প্রতিদিনের সম্পাদক সুমন সরদার, ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস ক্রাইম রিপোর্টার্স সোসাইটির কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাসুদ হোসেন খান সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও গণমাধ্যম কর্মীরা।