গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরী খানাখন্দে ভরা নিয়ে শিল্প উদোক্তাদের চরম হতাশা বিরাজ করেছে।
বিসিক শিল্পনগরীর রাস্তাগুলো বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে দীর্ঘদিন। গত আট মাস ধরে
বিসিক শিল্পনগরীর সমস্ত রাস্তা খুঁড়ে ফেলে রাখা হয়েছে। বর্ষা মৌসুম শুরুর পর পানি ও
কাদায় একাকার হয়ে বিসিকের সমস্ত রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে পণ্য
পরিবহনে ভোগান্তিতে পড়েছেন শিল্পনগরীর সকল ব্যবসায়ীরা। সরেজমিনে গোপালগঞ্জ বিসিক
শিল্পনগরী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানা যায়, শহর সংলগ্ন এ শিল্পনগরী সাড়ে ১০ একর জমির
ওপর প্রতিষ্ঠিত। এখানে ৬৪টি শিল্পপ্লট রয়েছে। এ নগরীর ১.৬৬ কিলোমিটার সড়ক ও ২.৩
কিলোমিটার ডেনের উন্নয়ন কাজ চলছে। আট মাস আগে এ কাজ শুরু হয়। কিন্তু করোনার
কারণে কাজ বন্ধ করে দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরীর শিল্প
উদ্যোক্তা মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, করোনায় তিন মাস বন্ধ থাকার পর কারখানায় উৎপাদন শুরু
করেছি। উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে না পেরে আমরা কারখানা চালাতে হিমশিম খাচ্ছি।
প্রতিদিন লোকসান গুণতে হচ্ছে আমাদের। এরপর আবার বিসিক শিল্পপ্লটের প্রতি স্কয়ার
ফুটের সার্ভিস চার্জ বাড়িয়ে দেড় টাকার স্থলে তিন টাকা করেছে, যা খুবই অমানবিক।
গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্পমালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আলহাজ মো. মোশাররফ হোসেন
বলেন, বিসিকের সড়কের বেহাল দশায় আমাদের ব্যবসা বাণিজ্যে ধস নেমেছে। এর মধ্যে আবার
শিল্পপ্লটের সার্ভিস চার্জ দ্বিগুণ করা হয়েছে। এ যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা। আমি সরকারের
নিকট আগের সার্ভিস চার্জ বহাল রেখে শিল্প মালিকদের রক্ষার জোড় দাবি জানাচ্ছি।
তাছাড়া গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরী কেন্দ্রে গড়ে ওঠা বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের
মালিকগণ করোনাকালীন সময় থেকেই লোকসান গুণে চলেছেন। আমরা সরকারের কাছ থেকে
কোন ধরনের প্রনোদনা বা আর্থিক সহায়তা পাইনি। ঠিকাদারের প্রতিনিধি এস.এম.
সাঈগীর কবির বাবু বলেন, ড্রেনের সঙ্গে সমন্বয় করে রাস্তা করতে হয়। আগে ড্রেন হয়েছে।
এ কারণে রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরুতে বিলম্ব হয়েছে। এছাড়া বাস্তবে কাজ করতে এসে
আমাদের অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে। তারপর করোনা শুরু হলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এতে
আমাদের ক্ষতি হয়েছে। আমরা গত ২০ আগস্ট থেকে পুনরায় কাজ শুরু করেছি। দুই মাসের
মধ্যেই রাস্তা ও ড্রেনের কাজ শেষ করবো। গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরী কর্মকর্তা মাসুদ
রানা বলেন, দীর্ঘদিন বিসিকের রাস্তা ও ড্রেনের কাজ ফেলে রাখায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে
শোকজ করা হয়। অবশেষে তারা কাজ শুরু করেছে। দ্রæত সময়ের মধ্যে আমরা মানসম্মত কাজ
বুঝে নেব। শিল্পমালিকরা বর্ধিত সার্ভিস চার্জ কমানোর দাবি করেছেন। এ ব্যাপারে তারা
আবেদন করলে আমরা বিসিকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করবো।