গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় অবাধে চলছে শামুক নিধন। যার ফলে হুমকির
মুখে পড়েছে এখানকার জীববৈচিত্র। অপরদিকে এভাবে শামুক নিধনের জন্য কৃষির
জমির উর্বরতা কমছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
এদিকে মৎস্য আইনে শামুক নিধনের সুনিদিষ্ট কোন আইন না থাকার কারণে
ব্যবস্থা নিচ্ছে না মৎস্য বিভাগ। প্রাণিবিভাগও রয়েছে নিরব। আর এ সুযোগে
প্রতিদিন কোটালীপাড়ার বিভিন্ন বিল থেকে সংগৃহিত শত শত বস্তা শামুক যাচ্ছে
গোপালগঞ্জ জেলার ৫ টি উপজেলার বিভিন্ন জায়গায়। তাছাড়া খুলনা, বাগেরহাটসহ
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যাচ্ছে এ শামুক।
প্রতি বছর আষাঢ় মাস থেকে আশি^ন মাস পর্যন্ত উপজেলার লখন্ডা,ছত্রকান্দা,
পিড়ারবাড়ি, নৈয়ারবাড়ি, রামনগর, কলাবাড়ি, কুমুরিয়া, সাটুুরিয়াসহ বিভিন্ন
বিল থেকে শামুক সংগ্রহ করে উপজেলা সদরে প্রশাসনের চোখের সামনে দিয়ে চলে
যায় নিজ জেলা এবং খুলনা, বাগেরহাটসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে । কৃষির জমির
উর্বরতা ও জীববৈচিত্র রক্ষার জন্য এভাবে শামুক নিধন বন্ধের দাবি জানিয়েছে
এলাকাবাসী।
পিড়ারবাড়ি গ্রামের শিক্ষানুরাগী অরুন মল্লিক বলেন, প্রতিদিন আমাদের বিল
থেকে শত শত মানুষ শামুক সংগ্রহ করে এলাকার ব্যাপারীদের কাছে বিক্রি করে। এভাবে
শামুক নিধনের ফলে জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়েছে। অপরদিকে দিন দিন জমির
উর্বরতা কমে যাচ্ছে।
রামনগর গ্রামের অখিল বাগচী বলেন, আমরা রামনগর বিল থেকে শামুক সংগ্রহ করে
লখন্ডা গ্রামের বিপুল মল্লিক, দিনেশ তালুকদার, নিখিল রায়ের কাছে বিক্রি করি।
প্রতি বালতি শামুকে আমাদেরকে ৮০টাকা করে দেয়।
ব্যবসায়ী বিপুল মল্লিক বলেন, প্রতিদিন আমরা দেড় থেকে ২শত বস্তা শামুক
বাগেরহাটের ফকিরহাটে বিক্রি করি। প্রতি বস্তা শামুকের জন্য আমাদেরকে ৩শত
টাকা করে দেয়। আষাঢ় মাস থেকে আশি^ন মাস পর্যন্ত আমাদের এই ব্যবসা চলে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা পলাশ দাস বলেন, শামুক প্রাণিসম্পদের মধ্যে পড়ে
না এটি মৎস্য অধিদপ্তরের বিষয়। শামুক নিধনে তারা ব্যবস্থা নিতে পারে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার প্রশান্ত কুমার সরকার বলেন, শামুক নিধনের বিরুদ্ধে
ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মৎস্য আইনে সুনিদিষ্ট কোন আইন না থাকার কারণে আমরা
ব্যবস্থা নিতে পারছিনা। তবে আমরা আমাদের দপ্তর থেকে শামুক নিধন না করার জন্য
মানুষদেরকে উৎসাহিত করছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন, যারা নির্বিচারে
শামুক নিধন করছে তাদের তাদের বিরুদ্ধে দ্রæতই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।