” কৃষ্ণচূড়ার কথা ” পর্ব-৬ ।

বাংলাদেশ

মো: রাফিউল হক সুমন :

যাকে উপলক্ষ্য করে শুরু করেছিলাম তার অন্তরালে ছিল স্মুতিময় সোনালী এক অধ্যায়, যে অধ্যায়ের সাথে জড়িয়ে আছে আমার তাহার তাহাদের নানান প্রকাশিত অপ্রকাশিত অধ্যায়, জীবন্ত স্মৃতি নিয়ে যে আবাসগুলি কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়েছিল যাকে দেখলে মনে পড়তো সেই স্বর্ণালী দিনগুলিকে, আজ বুঝি তার যবনিকা হতে চলেছে, কৃষ্ণচূড়া আজো ঠাঁয় দাড়িয়ে, হয়তো তাকেও অকাল পরিণতি মেনে নিতে হবে হয়তো তা নাও হতে পারে, তারপরও এখানের এই দালানকোটার ভীড়ে কিংবা কৃষ্ণচূড়ার নীড়ে আমাদের ছোট ছোট কথাগুলো অজানা অদেখা ব্যাথাগুলো আনন্দ বেদনার স্মৃতিগুলো জেগে রবে, জেগে রবে আমাদের হৃদয়ে, আমাদের আনন্দ হাসির কারো শৈশব কারো কৈশোর কারো যৌবনের কারো বা বৃদ্ধকালের কতনা হাসা রয়ে গেছে এই প্রাচীরঘেরা স্মৃতির মিনারে, নতুন ভবন হবে নতুন অতিথি আসবে নতুন স্মৃতির জন্ম হবে, এইতো স্বাভাবিক এই পৃথিবীর পরে কত ফুল ফুটে আর ঝরে, তবুওতো ফুটে ফুল পাখি গান গায়, সারা নিশী জ্বলে কত দ্বীপ নিভে যায়,নিজেরে পুড়ায়ে ধুপ গন্ধ বিলায়, তারপরও এই ধুপের কথা দ্বীপের ব্যাথা স্মরণ করো কোন অবসরে।রমজান মাসের বরকতময় দিনগুলি অতিবাহিত হচ্ছে, স্মরণের আবরণে ঢেকে যায়নি ফেলে আসা দিনগুলিতে রমজানের কী আনন্দ কী উদ্দীপনা, ইফতারের সময় কখন মায়ের হাতের নানান রকম ইফতারি, এ কথা লিখতে গিয়ে চোখ ছলছল করছে প্রিয় নেতার কথা মনে করে, যিনি সদ্য প্রয়াত সততার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, তাঁর একটি সাক্ষাৎকারের কথা মনে পড়ছে, সেদিনও রমজান মাস ই ছিলো, তিনি বলেছিলেন তাঁর মায়ের হাতের ইফতারের কথা, কড়লার সাথে ঘি মেখে গরম ভাত দিয়ে খাবার সোনালী স্মৃতির কথা, অকপটে বলছিলেন মায়ের হাতের সে ইফতারের স্বাদ তিনি আর খুঁজে পাননি,খুঁজে পাননি বড় বড় রেস্টুরেন্ট কিংবা বড় বড় পার্টিতেও সেই ইফতারের স্বাদ, আজ তিনি নেই কিন্তু তাঁর কথাগুলো বার বার মনে পড়ছে, সত্যিই মায়ের হাতে তৈরি ইফতারিই পৃথিবীর সকল সন্তানের জন্য শ্রেষ্ঠ, অমৃত, সারাদিন রোজা শেষে ঘরে ফিরে মায়ের হাতে তৈরি খাবার আমার কাছে আমাদের কাছে অমৃতের মত। মনে পড়ে ছোট্ট বেলায় রোজার দিন গননার কথা কবে শেষ হবে রোজা আসবে খুশির ঈদ, আর এখন মনে হয় বরকতময় দিনগুলি যেন দেরি করে শেষ হয়, আগেকার দিনের সেই আনন্দ আবেগ সব যেন কেমন ব্যস্ততার বেড়াজালে ম্লান হয়ে যাচ্ছে, আগেকার দিনের এ বাড়ি ও বাড়ি ইফতারি প্রেরণের সেই রেওয়াজও যেন আস্তে আস্তে উঠে যাচ্ছে, কেমন যেন যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে সবকিছু, কিন্তু কেন? আজওতো কৃষ্ণচূড়া টিকই আছে আজও ফুল ফোটে ফুল ঝরে কিন্তু কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য্য উপভোগ করার সময় যেন আমাদের নিকট হতে হারিয়ে যাচ্ছে, অনুভুতিগুলো যেন নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে, তবুও আশায় থাকি আশায় আছি আমাদের মধ্যকার আবেগ অনুভুতিগুলোর শেষ চিহ্ন যেন বহমান থাকে। (চলবে)

লেখক-
নাজির
উপজেলা নির্বাহী অফিস
কুলিয়ারচর, কিশোরগঞ্জ।

সংগ্রহে-
মুহাম্মদ কাইসার হামিদ
বিশেষ প্রতিবেদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.