মোঃ রাফিউল হক সুমন :
কত কথা যে জমা হয়ে আছে হৃদয়ের একুল ওকুল দুকুল জুড়ে, কিছুটা বলতে পারলে স্বস্তি অনুভুত হয়, কৃষ্ণচূড়া আজ আবার তাই তোমাকে নিয়ে লেখা, ভালোবাসা নামের দুটো শব্দ কি শুধু দু’জনের মাঝে সীমাবদ্ধতা কে বুঝায় ? না তা কখনও না, এই জীবনে একজন মানুষ যদি তার ভালোবাসাকে সবার মাঝে বিলিয়ে দিতে পারে তাই হবে সার্থক পরিপূর্ণ, কিন্তু জানি সে সার্থক মানুষদের দলে হয়তোবা নাম লেখাতে পারিনি, তথাপি চেষ্টা করি, দুটো শব্দকে সবার মাঝে বিলিয়ে দিতে, সে প্রচেষ্টা থেকেই কৃষ্ণচূড়া তোমার সাথে কথোপকথন, যারা ছিলেন অত্যন্ত প্রিয় গুরুজন চলে গেছেন জগত সংসারের মায়া ছিন্ন করে, তাদের শূণ্যতা খুব অনুভব করি, যারা ছিল স্কুল জীবনের সহপাঠি, কিংবা ছোট্টবেলার খেলার সাথী তাদের কথা মাঝে মাঝেই মনে পড়ে, মনে পড়ে সেই সব সোনাঝরা দিনগুলি, মনে পড়ে শীতের কুয়াশা ছেদ করে ফুল কুড়ানো প্রভাত ফেরির কথা, মনে পড়ে শীতের সকালে মিলিত হয়ে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ, কখনও মনে পড়ে গায়ের পথ ধরে হাটাঁ সরষে ফুলে ভরা অপরুপ দৃশ্য কিংবা ডিঙি নায়ে চড়ে শালুক কুড়ানো, সাঁতার জানতামনা বলে বন্ধুরা নৌকাকে দুল দিত আর কি ভয় আমার, মনে পড়ে ছোট্ট বন্ধুদের নিয়ে নাটক করা, স্কুল বানিয়ে পড়ানো, রথের মেলায় ঘুরে বেড়ানো, কাঠাল তলায় বসে পাকা কাঠাল খাওয়া, পুকুরে গোসল করতে গিয়ে ডুবতে যাওয়ার উপক্রম হওয়া, পাড়ার ছেলে মেয়েদের নিয়ে সন্ধ্যাকালে লুকোচুরি খেলা, কখনও বউ চি, দ্বারিয়াবান্দা হাডুডু কিংবা কাঁদামাটি মেখে ফুটবল খেলা, ছোটদের নিয়ে ইলেকশন ইলেকশন খেলা, কখনও স্কুলের নির্বাচনে ক্যাপ্টেন মনোনীত হওয়ার স্মৃতি, বৃষ্টিতে ভিজে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার স্মৃতি, মায়ের বকুনির সময় নানী দাদীর আড়াল করে রাখার স্মৃতি, শীতের পিঠা পুলি খাওয়ার স্মৃতি আরও কত কি সবি আমাকে তাড়া করে ফিরে, তাড়া করে ফিরে প্রিয় বন্ধুকে নিয়ে সাইকেল চড়ে দুরে কোথাও চলে যাওয়া, পাখি শিকারে যাওয়া, ঈদের আগের দিন হিন্দু মুসলিম সব বন্ধুদের নিয়ে ঘোরাঘুরি, সবাইকে কাগজের টুপি কিনে দেওয়া এবং সবে মিলে ঈদের নামাজ পড়া, সব স্মৃতি আমাকে তাড়া করে ফিরে, জানিনা এর নাম-ই কি ভালোবাসা, পাড়ার ছেলেদের সাথে রোদ্রে বসে একসাথে বই পড়া অজ আম ইট ঈষ কি মধুর সেসব স্মৃতি, আরও কত স্মৃতি কত কথা জমে আছে ছোট্ট এই হৃদয়টার মাঝে হয়তোবা অন্য কোন পর্বে তা আলোচনা করব, শুধু এইটুকুই বলবো কৃষ্ণচূড়া তোমায় ভাবতে গিয়েই আজ ভাবছি কত কথা তোমায় উপলক্ষ করেই বলতে চাই বহুকথা, সেই না বলা কথা শুনাবার আশ্বাস দিয়েই শেষ করছি আজকের পর্ব। (চলবে)
লেখক-
নাজির
উপজেলা নির্বাহী অফিস
কুলিয়ারচর, কিশোরগঞ্জ।