দৈনিক আজকের মেঘনা ষ্টাফ রিপোর্টার, লিটন সরকার বাদল,দাউদকান্দির আদমপুরে মৌসুমব্যাপি বিঘাপ্রতি দুইশ টাকা সেচ খরচে বোরোধানের আবাদ করা যায়। এ সেচ সুবিধার জন্য মোঃ কালু মিয়া (৫০) গ্রাম দৈয়ারা,মুরাদনগর । মোঃ আলম মিয়া (২৮) গ্রাম,দক্ষিণ মোহাম্মদ পুর,দাউদকান্দি। আবদুল মান্নান (৪০) গ্রাম, নাওতলা, আবদুস সাত্তার (৫০), গ্রাম মুরাদনগর,চান্দিনা।
তাদের মতো আরো অনেক কৃষকরা নিজের এলাকা ছেড়ে ১০/১৫ কিলোমিটার দুরে আদমপুর এসে বোরোধানের আবাদ করেন। তারা জানান, আমরা স্হানীয় কৃষকদের সাথে মিলেমিশে জমি পত্তন, বর্গা নিয়ে ধান চাষ করছি। কারন একটাই আমাদের এলাকায় বোরোধানের সেচ খরচ দিতে হয় ২০০০/২২০০ টাকা। আদমপুরে মাত্র দুইশ টাকার বিনিময়ে কৃষকবন্ধু মতিন সৈকত মৌসুমব্যাপি পৌষ থেকে বৈশাখ পাঁচ মাস, ধান লাগানো থেকে পাকা ধান কাটা পর্যন্ত মাত্র দুইশ টাকা বিঘাপ্রতি সেচ খরচ নেন। এখানে প্রায় বিনামূল্যে সেচ দিয়ে ধান উৎপাদন করে আমরা লাভবান হচ্ছি। আদমপুর গ্রামের মোঃ কালা মিয়া (৯০) মোঃ রোশন আলী (৭৫) মোঃ আলী আশ্রাফ (৫২) সিংগুলা গ্রামের মোঃ আব্দুর রহিম মোল্লা (৬০) পুটিয়ার মোঃ সুরুজ মিয়া ৫৩ জানান। আমরা ৫/৬ কানি (৩০ শতাংসে ১ কানি) করে ধান করি। আমাদের কৃষকবন্ধু, প্রফেসর মতিন সৈকত ২২/২৩ বছর ধরে আদমপুর আপুসি বোরোধানের মাঠে নিজের পকেটের টাকা ব্যায় করে ১৫০ বিঘা বোরোধানের জমিতে বিঘাপ্রতি মাত্র দুই' শ টাকার বিনিময়ে বোরোধানে সেচ দিয়ে দৃষ্টান্ত স্হাপন করেছেন। আমরা প্রতি বছর তার উদ্যোগে বোরোধান কাটা উপলক্ষ্যে সেচ উৎসব করি।
এবারো করেছি সেচ উৎসব। আমাদের আশেপাশেই সেচের খরচ ২০০০/২২০০টাকা নেয়। আমরা মতিন সৈকতের কাছে ২০০০ টাকার সেচের পানি পাই মাত্র দুই' শ টাকায়। দেশের কোথায় ও এত মাগনা (সস্তায়) সেচের পানি নাই। দূরের লোকজন ২০০টাকা সেচের কথা শুনলে বিশ্বাস করেনা। অথচ অবিশ্বাস্য মূল্যে মাত্র দুইশ টাকা সেচের নায়ক মতিন সৈকত। বিবিসি বাংলার প্রতিনিধি শাহনেওয়াজ রকি, চ্যানেল আইয়ের শাইখ সিরাজ, বিটিভির মাটি মানুষের রেজাউল করিম সিদ্দিকী, রামেন্দু মজুমদার,মুন্নিসাহা,রোম্মান রশিদ- সাদিয়া ওহাব, জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল সহ অনেক সাংবাদিকরা মতিন সৈকত কে নিয়ে প্রতিবেদন করেন। দুইশ টাকা সেচের নায়ক, রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রাপ্ত কৃষি,পরিবেশ,সমাজ উন্নয়ন সংগঠক মতিন সৈকত বলেন।' মৌসুমব্যাপি ১৫০ বিঘা জমিনে বিঘাপ্রতি দুই 'শ টাকায় ২২ বছর যাবত সেচ প্রদান আমার অন্যতম একটি সেবামূলক কাজ।' দাউদকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ সারোয়ার জামান বলেন। " আমি দাউদকান্দি আসার আগেই মতিন সৈকতের কাজের কথা অনেক শুনেছি। এখানে এসে তাকে কৃষি উন্নয়নে সব সময় কাছে পেয়েছি। তিনি ত্রিশ বছরের ও বেশি সময় ধরে কৃষি,পরিবেশ, সমাজ উন্নয়ন, মৎস্য চাষপ্রকল্প প্রতিষ্ঠায়,খাল-নদী পূনঃখনন, পাখি উদ্ধার ও অবমুক্তি, বিষমুক্ত নিরাপদ ফসল উৎপাদন সহ বহুমুখী আনন্দোলন করে আসছেন। মতিন সৈকত তার কাজের স্বীকৃতি ও পেয়েছেন। তিনি রাষ্ট্রপতির অভিনন্দন পত্র পেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে দুইবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক দিয়েছেন। পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারিভাবে চারবার চট্টগ্রাম বিভাগে প্রথম স্হান অর্জন করেছেন।" দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজর মোহাম্মদ আলী (অবঃ) বলেন।" মহামান্য রাষ্টপতির অভিনন্দন ধন্য,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক দুইবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক প্রাপ্ত কৃষি,পরিবেশ, সমাজ উন্নয়ন সংগঠক, কৃষকবন্ধু মতিন সৈকত পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারিভাবে চতুর্থবার চট্টগ্রাম বিভাগে প্রথম স্হান অর্জন করায় আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।" দাউদকান্দি-মেঘনা আসন থেকে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অবঃ) মোঃ সুবিদ আলী ভূইয়া মন্তব্য করেন। " মতিন সৈকত দুই দশকের বেশি সময় ধরে কৃষি,পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করে জাতি গঠনে অবদান রাখছেন।"