কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফার্মেসীতে ডেকে এনে দিনের বেলায় মুসলিম পরিবারের এক কলেজ ছাত্রীকে (১৭) ধর্ষণের সময় কৃষ্ণ চন্দ্র বিশ্বাস (২২) নামে এক পল্লী চিকিৎসককে হাতে নাতে আটক করে পুলিশে দিয়েছে জনতা। সোমবার ৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টার দিকে উপজেলার দ্বাড়িয়াকান্দি কান্দিগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে পুষ্প মেডিকেল হলে এ ঘটনাটি ঘটে। পল্লী চিকিৎসক কৃষ্ণ চন্দ্র বিশ্বাস উপজেলার মাইজপাড়া গ্রামের কাঠমেস্তরী সুভাস চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে। ধর্ষিতা কিশোরী পার্শ্ববর্তী নরসিংদী জেলার বেলাব সরকারি হোসেন আলী কলেজের প্রথম বর্ষের মানবিক বিভাগের ছাত্রী ও বেলাব মাটিয়াল পাড়া গ্রামের এক গরু ব্যবসায়ীর কন্যা। ঘটনাস্থলে ধর্ষিতা কলেজ ছাত্রী জানান, কৃষ্ণ চন্দ্র বিশ্বাসের সাথে প্রায় ১ বছর ২ মাস আগে তার পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ওই সময় সে জানতোনা প্রেমিক কৃষ্ণ চন্দ্র বিশ্বাস হিন্দু পরিবারের ছেলে। কেননা কৃষ্ণ চন্দ্র বিশ্বাস তথ্য গোপন করে নিজেকে মুসলমানের সন্তান পরিচয় দিয়ে তার নাম বলেছিল তীব্র। সোমবার সকাল ১০ টার দিকে কৃষ্ণ চন্দ্র বিশ্বাস তাকে বাড়ি থেকে ডেকে ফার্মেসীতে এনে দোকানের পিছনে রোগী দেখার বেডে নিয়ে দোকানের সাটার বন্ধ করে তাকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করতে থাকে। এ সময় টের পেয়ে বাজারের লোকজন কৃষ্ণ চন্দ্র বিশ্বাসের হাত থেকে তাকে উদ্ধার করে কৃষ্ণকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। অভিযুক্ত কৃষ্ণ চন্দ্র বিশ্বাস উপস্থিত জনতার সামনে স্বীকার করে বলে, তথ্য গোপন করে সে নিজেকে মুসলিম পরিবারের সন্তান দাবী করে ওই ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তার ফার্মেসীতে ডেকে এনে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে। সংবাদ পেয়ে কুলিয়ারচর থানার এস আই মো. এমদাদুল হক ও এএসআই জুয়েল ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে ধর্ষক কৃষ্ণ চন্দ্র বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। এব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এস আই মো. এমদাদুল হক বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা রুজু হয়েছে। মামলা নং ৫/১৯। মঙ্গলবার (৯ফেব্রুয়ারি) সকালে ভিকটিমকে জবান বন্ধি দেওয়া জন্য ও ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য কিশোরগঞ্জ পাঠানো হয়েছে। আসামীকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অপর দিকে এর আগের দিন ৭ ফেব্রুয়ারি রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে ৬ বছরের এক শিশুকে যৌন উৎপীড়নের অভিযোগে সোহাগ মিয়া (১২) নামে এক কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কান্দুলিয়া গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মস্তো মিয়ার ছেলে মো. হালিম মিয়ার লেয়ার মুরগির ফার্মে। এ ঘটনায় শিশুর পিতা ফারুক মিয়া বাদী হয়ে কুলিয়ারচর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলা নং- ৪। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রোববার (৭ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে সালুয়া ইউনিয়নের কান্দুলিয়া গ্রামের হালিম মিয়ার লেয়ার মুরগীর ফার্মের পাশে খেলারত অবস্থায় শিশুটিকে ফার্মের একটি ঘরে ডেকে নেয় অভিযুক্ত সোহাগ মিয়া। পরে ঘরের দরজা বন্ধ করে শিশুটিকে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে যৌন উৎপীড়ন করতে থাকলে শিশুটি চিৎকার দিয়ে উঠে। চিৎকার শুনে শিশুটির মা ও চাচা ঘরের দরজা খুলে শিশুটিকে উদ্ধার করে। এ সময় সোহাগ মিয়া ভয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। রাত সাড়ে ৭ টার দিকে শিশুর মা বাবা শিশুটিকে কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে। এব্যাপারে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ইখতেখার আনাম নোমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলে, শিশুটির শরীরে দাগের চিহ্ন রয়েছে। তবে ধর্ষণের চেষ্টা কিনা তা এখানে পরীক্ষা করা হয় না। কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল ছাড়া এ পরীক্ষা করা সম্ভ নয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মো. আতাউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই শিশুটির যৌনাঙ্গে আঙ্গুল দিয়ে ঘোতা দিয়েছে। যাকে বলে যৌন উৎপীড়ন। গত সোমবার ৮ ফেব্রুয়ারি শিশুটিকে উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং অভিযুক্ত কিশোরটিকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।