কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে এক বুূদ্ধি প্রতিবন্ধী নারী গণধর্ষণের অভিযোগে কুলিয়ারচর থানায় দায়ের করা মামলা নং ২১/১০৯ এর প্রধান আসামী রবিন অবশেষে ঘটনার ২৫ দিন পর পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ জুন) সন্ধ্যার দিকে কুলিয়ারচর থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে । জানা যায়, সোমবার (২২ জুন) সকাল ১১ টার দিকে কুলিয়ারচর পৌরসভা এলাকার দড়িবাগ মহল্লায় নিজ বাড়ীতে ‘‘পুলিশি হয়রানীর প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলন’’ শেষে মো. হুমায়ুন কবির (৫৫) পরদিন ২৩ জুন মঙ্গলবার বিকাল ৫ টার দিকে তার ছেলে হৃদয় ইকবাল রবিন (২৩) কে কুলিয়ারচর থানায় নিয়ে আত্মসর্ম্পন করান। এর পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হাই তালুকদার পুলিশ পাঠিয়ে ভিক্টিমকে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় ধর্ষিতা নারী নিজে রবিনের পিতা, ভিক্টিমের মা, কুলিয়ারচর পৌরসভার এক কাউন্সিলর ও এক সাংবাদিক সহ পুলিশ সদস্যদের সামনে আসামী রবিন কে ধর্ষক হিসেবে শনাক্ত করে। এর পর রবিনকে গ্রেফতার করে বুধবার (২৪ জুন) দুপুরে কিশোরগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। এ ব্যাপারে কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হাই তালুকদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রবিনকে গ্রেফতারের কথা স্বীকার করে বলেন, বুধবার (২৪ জুন) দুপুরে রবিনকে কিশোরগঞ্জ আদালতে প্রেরন করে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে আসামীকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে রবিনের কর্মস্থল প্রিমিয়ার ব্যাংক, বনানী, ঢাকা গিয়ে জানা যায়, সে গত ১৫ জুন থেকে তার কর্মস্থলে অনুপস্থিত। সেখানকার কেউ তার অবস্থান বলতে পারছে না। এমনকি তার ফোন নাম্বারও বন্ধ ছিল। আমি থানায় ফিরে আসার পর বিকালে তারা থানায় যোগাযোগ করতে এলে ভিক্টিমের শনাক্ত অনুযায়ী রবিনকে গ্রেফতার করা হয়। এ বিষয়ে গ্রেফতারকৃত রবিনের বাবা সাংবাদিকদের বলেন, মামলার এজাহারে আসামির নাম মো. রবিন মিয়া (২৩), পিতার নাম মো.শামসু মিয়া, গ্রাম-মেরাতুলী। কিন্তু আমার ছেলের নাম হৃদয় ইকবাল রবিন (২৪), পিতার নাম মো. হুমায়ুন কবির, গ্রাম -দড়িবাগ। তিনি আরও বলেন, আমার ছেলে সম্পূর্ণ নির্দোষ। নামের কিছুটা মিল থাকায় ভূলবশত আমার ছেলেকে অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ধর্ষিতা নারী থানায় রবিনকে ধর্ষক হিসেবে শনাক্ত করে বলেন, এই রবিনই আসামী রবিন। গণধর্ষণের ঘটনার সাথে রবিন জড়িত ছিল দাবী করে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ধর্ষিতা ও তার পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন। মামলা রুজু হওয়ার পর থেকে ধর্ষিতার চাচাতো বোন নিলুফা আক্তার নিলা (৩৫) কে আসামী রবিনের পরিবার সহ অন্যান্য আসামী পক্ষের লোকজন মোবাইল ফোনে ও প্রকাশ্যে বিভিন্ন প্রকার হুমকি প্রদর্শন করে আসছে বলে জানান নিলূফা আক্তার নিলা। উল্লেখ্য, কুলিয়ারচর পৌর এলাকার আশ্রবপুর মহল্লার এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী (২০) নারীকে ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে গত ২৮ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে তার বাড়ীর পাশ্ববর্তী দোয়ারিয়া কুমারপাড়া শ্বসান ঘাটে নিয়ে ৩ যুবক জোর পূর্বক পালাক্রমে গণধর্ষণ করে। এ ঘটনায় বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ধর্ষিতা নারী বাদী হয়ে মো. রবিন মিয়া (২৩) কে প্রধান আসামী করে মামুন মিয়া (২৫) ও ইমন মিয়ার (২৪) নামে কুলিয়ারচর থানায় ২০০০ সনের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী/২০০৩) এর ৯(৩) ধারায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলা নং ২১/১০৯ ।