বিশ্বজুড়ে মহামারীর আকার নিয়ে করোনাভাইরাস। প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বিশ্বের একাধিক দেশে সংক্রমণ আটকাতে জারি করা হয়েছে লকডাউন। যাতে মানুষ বাড়ির বাইরে না বেরিয়ে সংক্রমণ ঠেকাতে পারে, ভাইরাসের চেন ভেঙে ফেলা যায় সেদিকেই নজর রাখা হচ্ছে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের কাজ।
একাধিক ডাক্তার এবং পিএইচডি স্কলারও যুক্ত রয়েছেন এই কর্মযজ্ঞে। পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউএমপিসির সহযোগিতায় কাজ চালানো হচ্ছে। টাকার যোগানের দায়িত্বে রয়েছে এনআইএইচ ইনস্টিটিউট। ল্যানসেট ইবায়োমিডিসিন এর একটি জার্নালে এ নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা মনে করছেন, এই অ্যান্টিবডি বিশ্বজুড়ে মানুষের শরীরে যেভাবে ভ্যাকসিন দেওয়া হয় তার ধারা বদলে দেবে।
গবেষকরা বলেছেন, খুব দ্রুত এই ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট থেকে দীর্ঘমেয়াদী ভ্যাকসিন তৈরি হয়ে যাবে। ইঁদুরের শরীরে এর কার্যকারিতা দেখে দাবি করা হয়েছে, করোনা আক্রান্ত মানুষের শরীরেও একইভাবে অ্যান্টিবডি তৈরি করবে এই ভ্যাকসিন।
পিটসবার্গ স্কুল অব মেডিসিনের সার্জারি বিভাগের গবেষক-অধ্যাপক অ্যান্দ্রেয়া গ্যামবোট্টোর দাবি, ২০০৩ সালে সার্স (SARS-CoV) ও ২০১৪ সালে মার্স (MERS-CoV) ভাইরাসের প্রতিরোধী ভ্যাকসিনও তৈরি হয়েছিল পিটসবার্গ স্কুল অব মেডিসিনে।
তার কথায়, 'আগের দুটো মহামারীর ভয়াবহতা আমরা দেখেছি। তখনও ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা হয়েছিল। সার্স-কভ-২ ভাইরাসের সঙ্গে সার্স ও মার্স ভাইরাসের মিল রয়েছে। তাই এই নতুন ভাইরাসের ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট কেমন হবে সেটা অনুমান করা গিয়েছে।'
আগামী দু'সপ্তাহের মধ্যেই মানুষের উপর এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগ হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। পিটসবার্গ করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলক এমআরএনএ ভ্যাকসিন ক্যানডিডেটের থেকেও বেশি কার্যকরী হবে বলে দাবি করেছেন, সেখানকারই ভাইরোলজিস্ট লুই ফালো।
তিনি বলেছেন, সার্স-কভ-২ ভাইরাল প্রোটিনগুলোকে শনাক্ত করে ল্যাবেই এমন ভাইরাল প্রোটিন বানানো হয়েছে যা দেহকোষে শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরি করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। শুধু কোভিড-১৯ নয়, আগামী দিনে এমনই কোনও সংক্রামক ভাইরাসঘটিত রোগকে রুখতেও এই ভ্যাকসিন কাজে আসতে পারে।